ঢাকা, সোমবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২ মহররম ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম চালান নিলো তুরস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম চালান নিলো তুরস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের যাবতীয় চোখ রাঙানি-হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘এস-৪০০’র প্রথম চালান গ্রহণ করেছে তুরস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হিসেবে তুরস্কের এই অস্ত্র কেনার সমালোচনায় ওয়াশিংটন উত্তাপ ছড়ালেও আঙ্কারা তা পরোয়া না করেই ‘এস-৪০০’ গ্রহণ শুরু করলো।

শুক্রবার (১২ জুলাই) এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রথম চালান আঙ্কারার বাইরে মার্তাদ সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছায়। পরে এক বিবৃতিতে বিষয়টি দেশবাসীকে জানায় তুরস্কের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

‘এস-৪০০’ আকাশ প্রতিরক্ষায় বিমানবিধ্বংসী সবচেয়ে উন্নততর সমরপ্রযুক্তি। ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণের এই ক্ষেপণাস্ত্রের আওতা প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। এটি একনাগাড়ে ৮০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। স্বল্প উচ্চতার ড্রোন থেকে শুরু করে যে কোনো উচ্চতায় যুদ্ধবিমান এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত হানতে সক্ষম এই সমরাস্ত্র। এই প্রযুক্তির প্রতি ইউনিটে থাকে ৯টি করে লঞ্চার (যেখান থেকে ছোড়া হয়), ১২০টি করে ক্ষেপণাস্ত্র এবং কমান্ড ও সাপোর্টের জন্য সরঞ্জাম ও বাহন।

এমন চারটি ইউনিট কেনার জন্য ২০১৭ সালে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সই করে তুরস্ক। এজন্য মস্কোকে বড় অংকের অর্থ দেয় আঙ্কারা। ‘এস-৪০০’র প্রথম চালান পৌঁছেছে তুরস্কে।  ছবি: সংগৃহীতকিন্তু চুক্তিটি সই হওয়ার পর থেকেই তুরস্কের সমালোচনায় সরব দেশটির ন্যাটো-মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার সঙ্গে ওই চুক্তির আগে তুরস্ক এফ-৩৫ অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। সেই সূত্র টেনে ওয়াশিংটন তখন থেকে বলে আসছে, রাশিয়ার প্রযুক্তি ন্যাটোর প্রতিরক্ষা পদ্ধতির জন্য হুমকি এবং তা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী। তাই রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ নিলে যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাবে না তুরস্ক।

তখনতুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোয়ান উল্টো ওয়াশিংটনের সমালোচনা করে বলেন, ‘তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের দাস নয়। যেকোনো দেশ থেকে অস্ত্র কেনার স্বাধীনতা রয়েছে তুরস্কের’। এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান সংক্রান্ত চুক্তি বাতিলে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা সেখানে অর্থ ঢেলেছি। তারপরও তা না দিলে সেটা হবে ডাকাতি। ’

এরপরও রাশিয়ার এস-৪০০ নিয়ে আসার সিদ্ধান্তে তুরস্ক অনড় থাকায় পঞ্চম প্রজন্মের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেশটিকে দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে যায় যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ন্যাটো-মিত্র হিসেবে এই যুদ্ধবিমান ঘিরে সব কার্যক্রমে তুরস্কের অংশগ্রহণ বন্ধের পরিকল্পনা প্রকাশ করে পেন্টাগন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা আঙ্কারাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মস্কোর সঙ্গে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার না করলে আঙ্কারাকে ‘অর্থনৈতিক’ পরিণতিতে পড়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

সেই হুংকার-হুঁশিয়ারিকে উপেক্ষা করেই আঙ্কারার সামরিক ঘাঁটিতে এস-৪০০ নিয়ে গেলো তুরস্ক।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।