রাজ্য হিসেবে ভারতশাসিত কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা বাতিল করে অঞ্চলটিকে তিন ভাগে ভাগ করা নিয়ে চাপা উত্তেজনার মধ্যে মেহবুবাকে তার শ্রীনগরের বাড়ি থেকে অদূরের একটি সরকারি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ওমর আব্দুল্লাহকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি।
কয়েকদিন ধরে কাশ্মীরে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি করে বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েনের পর সোমবার ভারত সরকার ওই রাজ্যটির জন্য সংবিধানে থাকা বিশেষ সুবিধার ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল করে দেয়। এই অনুচ্ছেদের সুবাদেই ভারতশাসিত কাশ্মীর নিজেদের সংবিধান ও একটি আলাদা পতাকার স্বাধীনতাও পেয়েছিল। এমনকি সেখানে সরকারি চাকরি, জমি কেনা, ব্যবসা করার অধিকার কেবল কাশ্মীরিদেরই ছিল। কিন্তু অনুচ্ছেদটি বাতিলের ফলে আলাদা সংবিধান ও পতাকা হারানোর পাশাপাশি কাশ্মীরিরা সরকারি চাকরি, জমি কেনা ও ব্যবসা করার ক্ষেত্রে একক অধিকারও হারিয়েছে।
ব্রিটিশরা উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় এই বিশেষ সুবিধার বিষয়টি শর্ত হিসেবে ধরেই তখনকার কাশ্মীরের শাসকরা ভারতে যোগ দিতে সায় দেয়। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপির নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলোর একটিই ছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার রাজ্য কাশ্মীরের এই সুবিধা বাতিল করে অন্য রাজ্যগুলোর মতোই সেখানে কেন্দ্রীয় শাসন বলবৎ করা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে বিরোধীদের তুমুল বাধা ও হট্টগোলের মুখেও এই ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল করার ঘোষণা দেওয়ার পর বিজেপির একসময়ের মিত্র পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজনীতিক মেহবুবা মুফতি টুইটে বলেন, ‘ভারত সরকারের উদ্দেশ্য স্পষ্ট এবং অশুভ। তারা একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যের ‘ডেমোগ্রাফি’ (জনসংখ্যাগত চরিত্র) বদলে দিতে চাইছে। মুসলিমদের এমন নিরীহ অবস্থায় তারা ফেলতে চাইছে, যেন তারা নিজেদের রাজ্যেই দ্বিতীয় শ্রেণীর বাসিন্দা হয়ে থাকে’।
তারও আগে আরেক টুইটার বার্তায় মেহবুবা বলেন, ‘এটা ভারতীয় গণতন্ত্রের কালো দিন হয়ে থাকবে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের একতরফা অবৈধ ও অসাংবিধানিক এ সিদ্ধান্ত ভারতকে কাশ্মীরে দখলদার বাহিনী হিসেবেই প্রমাণ করবে। ’
গ্রেফতার হওয়ার আগে ওমর আব্দুল্লাহ বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে লড়বেন বলে ইঙ্গিত দেন।
এছাড়া এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংসদে তুমুল প্রতিবাদ জানান কংগ্রেসের সংসদীয় প্রধান গুলাম নবী আজাদসহ অনেক বিরোধী রাজনীতিক।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৯
এইচএ/