শনিবার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় তালিকাটি প্রকাশ করা হয়। যেখানে স্থান পায়নি রাজ্যটিতে বসবাসরত প্রায় ১৯ লাখ মানুষ।
যদিও তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাওয়া লোকদের এখনও আপিলের সুযোগ রয়েছে, তবে এতেও তাদের অনিশ্চয়তা কাটছে না।
এদিকে তালিকা প্রকাশের পর থেকেই এ নিয়ে উদ্বেগ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভারতের বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরাই।
এক টুইটার বার্তায় আসামের কংগ্রেসের এমপি আব্দুল খালেক বলেন, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশে কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন। তবে এ তালিকা প্রকাশে আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। কারণ তালিকা থেকে অনেক ভারতীয় নাগরিকের নামও বাদ পড়েছে। আমি এ তালিকা পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
কংগ্রেসের নেতা শশী থারুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক উক্তিই শেয়ার করেন টুইটারে। সেটি হলো- দেশাত্মবোধ ও বিদেশিদের প্রতি অহেতুক ভয়ের মধ্যে একটি বিভেদ রেখা রয়েছে। যারা বিদেশিদের ঘৃণা করছে, তারাই ভবিষ্যতে ভারতীয়দের মধ্যে যারা আলাদা, তাদেরও ঘৃণা করতে পারে।
আসামের মন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মাও চূড়ান্ত এই তলিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, বৈধ নাগরিকদের চিহ্নিত করা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের রাজ্য থেকে তাড়াতে এই তালিকা কতটা সহযোগী হবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
এছাড়া ক্ষমতাসীন বিজেপির অনেক নেতাই ইতোমধ্যে চূড়ান্ত এই তালিকা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। তাদের ধারণা, চূড়ান্ত এই তালিকা থেকে বহু বাঙালি হিন্দুর নাম বাদ পড়তে পারে। পাশাপাশি অনেক বিদেশির নামও এই তালিকায় ঢুকে পড়তে পারে।
অন্যদিকে ‘ভারতের রাজধানী দিল্লিতেও এনআরসি প্রয়োজন’ উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দিল্লির প্রধান মনোজ তিওয়ারি বলেন, পরিস্থিতি দিনদিন খারাপ হচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা রাজধানীর জন্য ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন। আমরা এখানেও এনআরসি বাস্তবায়ন করবো।
এদিকে চূড়ান্ত এই তালিকা নিয়ে এক পর্যালোচনা সভা ডেকেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। যা শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে উদ্বেগ ও অনিশ্চিয়তায় থাকা নাগরিকদের অবশ্য আশ্বস্তই করছে সরকার।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চূড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকা নাগরিকদের ১২০ দিনের মধ্যে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে বলা হয়েছে। এই সময়সীমা আগে ছিল ৬০ দিন।
দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে শুনানির জন্য রাজ্যজুড়ে এক হাজার ট্রাইব্যুনাল গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যেই ১০০ ট্রাইব্যুনাল খোলাও হয়েছে। এছাড়া সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই আরও ২০০টি ট্রাইব্যুনাল খোলা হবে।
এছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে মামলাটি হেরে যান, তিনি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হতে পারেন বলেও মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৯
এসএ/