ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, শনিবার (৩১ আগস্ট) প্রকাশিত এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় নিজেদের নাম খুঁজে পাননি ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ফখরউদ্দিন আলী আহমদের স্বজনরা। সাবেক এ রাষ্ট্রপতির ভাই একরামুদ্দিন আলী আহমদের ছেলে জিয়াউদ্দিন গতবছরের জুলাইয়ে প্রকাশিত এনআরসির খসড়া তালিকায় নিজেদের নাম না দেখায় বিস্মিত হয়েছিলেন।
চূড়ান্ত তালিকায় নাম না দেখে হতবিহ্বল জিয়াউদ্দিন আলী আহমদ বলেন, আমি সাবেক রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমদের ভাইপো। আমার নাম এনআরসিতে নেই। উত্তরাধিকার তথ্যে আমার বাবার নামও নেই। আমরা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।
১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৭ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অধিকর্তা ছিলেন ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ। ভারতের এ পঞ্চম রাষ্ট্রপতির পরিবার বর্তমানে আসামের কামরূপ জেলার রঙ্গিয়ার বাসিন্দা।
ভারতের মধ্যে আসামই একমাত্র রাজ্য যারা এনআরসি চালু করলো। এ তালিকায় নাম উঠেছে মোট ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জনের। বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন। এরমধ্যে ১১ লাখের মতো হিন্দু বাঙালি, ৬ লাখ মুসলিম বাঙালি এবং বাকিরা বিহারী, নেপালী, লেপচা প্রভৃতি।
বাদ পড়া নাগরিকদের বিষয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজ্যজুড়ে প্রায় ১ হাজারের মতো বিদেশি ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে ১০০ ট্রাইব্যুনাল খোলা হয়েছে। আরও ২০০টি ট্রাইব্যুনাল সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই খোলা হবে। সেখানে যাদের নাম এনআরসি থেকে বাদ পড়েছে তারা আবেদন করতে পারবেন। তাদের এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। আবেদন করতে হবে আগামী ১২০ দিনের মধ্যে। এছাড়া যদি কেউ ট্রাইব্যুনালে আপিল করে ব্যর্থ হন, তাহলে সর্বোচ্চ আদালতেও যেতে পারবেন।
আসামের কর্মকর্তারা বিশেষ করে কট্টরপন্থিরা মনে করেন, প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক বাসিন্দা আসামে ঢুকে ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন এবং রাজ্যের জনতাত্ত্বিক চিত্র বদলে দিচ্ছেন।
এই তালিকায় যাদের জায়গা হয়নি, তারা আসামিজ পরিচিতি পাবেন না। এদের অনেক আগে থেকেই ‘অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ বিবেচনা করে আসছে রাজ্যের কট্টরপন্থি অংশ।
যদিও বিষয়টি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে বলেছে, এটি ভারতেরই অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তার কারণ নেই।
আরও পড়ুন>> সাবেক রাষ্ট্রপতির স্বজনরাও নেই আসামের নাগরিকপঞ্জীতে!
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
এইচএডি/এইচএ/