সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তান সীমান্তবর্তী প্রদেশ পাঞ্জাবের পাঠানকোট শহরে অভিনন্দন এই ‘প্রত্যাবর্তনের’ ফ্লাইট চালান।
এমন একটি বড় দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে যাওয়া অভিনন্দন ফের আকাশে উড়বেন কি-না, এ নিয়ে আলোচনার ছ’মাসের মধ্যেই তিনি মিগ-২১ চালালেন।
সোমবার অভিনন্দন ও ধানোয়া দু’জনে পাঠানকোট বিমানঘাঁটি থেকে মিগ-২১ এর প্রশিক্ষণ বিমানটি নিয়ে ওড়েন। এয়ার চিফ মার্শাল সামনের আসনে বসেন, পেছনের আসনে বসেন অভিনন্দন বর্তমান।
পরে ধানোয়া সাংবাদিকদের জানান, অভিনন্দনের মতো ১৯৮৮ সালে তাকেও একবার উড়ন্ত যুদ্ধবিমান থেকে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল। ওই ঘটনার পর কাজে ফিরতে তার প্রায় ৯ মাস লেগে গিয়েছিল। সেখানে অভিনন্দন মাত্র ৬ মাসেই নিজেকে প্রস্তুত করে ফেললেন ফের ওড়ার জন্য।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় ভারতের বিশেষায়িত নিরাপত্তা বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) গাড়িবহরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ৪৪ জওয়ান নিহত হন।
জঙ্গিদের মদত দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করে এর মোক্ষম জবাব দিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে পাকিস্তানের বালাকোট শহরে জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদের আস্তানায় হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। এর একদিন পরই বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতের দু’টি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয় এবং পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে আটক করে পাকিস্তান।
অভিনন্দন পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়েছিলেন যুদ্ধবিমান মিগ-২১ নিয়ে। তবে সেই যুদ্ধবিমানটি ভূপাতিত করে ফেলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। ওই যুদ্ধবিমান থেকে তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে পাইলট অভিনন্দন পড়ে যান পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে। কাশ্মীরীরা তাকে ধরে আক্রমণ করতে চাইলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অভিনন্দনকে নিজেদের জিম্মায় নেয়।
এরপর ভারত তাদের পাইলটকে ফেরত চেয়ে দিল্লিতে নিযুক্ত দেশটির উপ-হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠায়। শুরু করে কূটনৈতিক দৌড়ঝাপ। এর মাঝেই ২৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা দেন, ‘শান্তির স্বার্থে’ অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়া হবে। পরে ১ মার্চ রাতে দুই দেশের ‘ওয়াঘা সীমান্ত’ দিয়ে অভিনন্দনকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে পাকিস্তান সরকার। দেশে ফেরার পর অভিনন্দনকে ‘বীর চক্র’ সম্মান দেয় ভারত সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৯
এইচএ/