ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

পাচারকারীদের যোগসাজশে যোদ্ধা ভাড়া করে সৌদি আরব!  

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯
পাচারকারীদের যোগসাজশে যোদ্ধা ভাড়া করে সৌদি আরব!  

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের অর্থনৈতিক দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে পাচারকারী চক্রের সহায়তায় সৌদি আরব দেশটি থেকে বিভিন্ন বয়সী লোকজনকে যোদ্ধা হিসেবে ভাড়া করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব ভাড়াটে সেনার মধ্যে রয়েছে শিশুরাও।

সম্প্রতি জেনেভাভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা এসএএম এ অভিযোগ তুলেছে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

 

এসএএম’র প্রতিবেদন অনুসারে, জরুরি চিকিৎসাসেবার অজুহাতে অনেক অসহায়, দরিদ্র ইয়েমেনিকে সৌদি আরবে নেওয়া হয়। পরে রিয়াদের পক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তে হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয় তাদের। সৌদি আরব এসব যোদ্ধাকে ভাড়াটে বলে অভিহিত করছে।  

প্রতিবেদন জানায়, গত চার বছর ধরে ‘মানবপাচারকারী চক্রের সহায়তায়’ দেশটি শিশুসহ হাজার হাজার ইয়েমেনিকে যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এ প্রক্রিয়া এখনও চলমান। বেসামরিক লোকজনকে যুদ্ধে ব্যবহার করার এ বিষয়টিকে রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছে এসএএম।

হুথি-সৌদি আরব যুদ্ধে শিশুরা।  ছবি- সংগৃহীত

সংস্থাটি জানায়, যদিও সৌদি আরব এদের সৈন্য হিসেবে পরিচয় নম্বর ও সামরিক পদবি দেয়, কিন্তু বাস্তবে তারা প্রকৃত সৈন্য নয়। তাদের স্থায়ী কোনো অধিকার নেই।  

প্রায়ই এসব যোদ্ধার মধ্যে নিহতদের দাফন বিষয়ে তাদের পরিবারকে অবহিত করা হয় না। কিছু পরিবার হয়তো জানতে পেরে কোনোমতে স্বজনের মরদেহ সংগ্রহ করে। কিন্তু বেশিরভাগ পরিবারই জানে না তাদের ভাগ্যে আসলে কী ঘটেছে। এর বাইরেও বর্তমানে প্রায় তিনশ ভাড়াটে ইয়েমেনি যোদ্ধা অঙ্গহানির শিকার হয়ে চিকিৎসার আশায় সৌদি আরবে অবস্থান করছে।  

এদিকে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধরত সব পক্ষই সৈন্য হিসেবে শিশুদের ব্যবহারের সৌদি কার্যকলাপে নিন্দা জানিয়েছে। রিয়াদের এ অপরাধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে আন্তর্জাতিক মহলকে আহ্বান জানিয়েছে এএসএম।

এর আগে ২০১৮ সালের জুনে যে সব দেশের বিরুদ্ধে শিশু সৈন্য নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, সে তালিকায় সৌদি আরবকে অন্তর্ভুক্ত করা থেকে অব্যাহতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই ঘটনায় মানবাধিকারকর্মীদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।   

২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলছে। সে সময় রাজধানী সানাসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় হুথি বিদ্রোহীরা। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনে সৌদি আরব তার আঞ্চলিক মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্যদের সঙ্গে নিয়ে হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। তারা চায় হুথিদের ক্ষমতাচ্যুত করে আগের সরকার ফিরিয়ে আনতে।  

জাতিসংঘের মতে ইয়েমেনে চলমান এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯  
এইচজে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।