ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

আদালতকেও ‘ভুল’ বললেন বরিস, বিরোধীদের ‘চক্ষু চড়কগাছ’ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯
আদালতকেও ‘ভুল’ বললেন বরিস, বিরোধীদের ‘চক্ষু চড়কগাছ’ 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিট ঘিরে অচলাবস্থা কাটানোর ‘কূটকৌশল’ হিসেবে চলতি মাসের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিতের বুদ্ধি কষেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এতে করে ইইউর সঙ্গে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ ঠেকাতে বিরোধীরা হাতে পর্যাপ্ত সময় পাবে না। হিসেব মতে চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার কথা। চুক্তি হোক বা না হোক এ দফাতেই এটি কার্যকর করতে মরিয়া কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী বরিস। 

কিন্তু মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বরিসের ‘কূটকৌশলে’ বাগড়া দিয়েছেন ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট। এদিন ঐতিহাসিক এক রায়ে বরিসের পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে রায় দেন আদালত।

স্থগিতাদেশ অকার্যকর হওয়ায় পরের দিনই পুনরায় পার্লামেন্ট অধিবেশন বসে। আর এতে করে ভেস্তে যায় বরিসের পরিকল্পনা। আদালতের রায় আর পার্লামেন্ট অধিবেশন, দুই মিলে তড়িঘড়ি করে নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সম্মেলনের সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশেও ফিরতে হয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে।  

দেশে ফিরেই বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) পার্লামেন্ট অধিবেশনে যোগ দেন বরিস জনসন। সেখানেই বক্তব্যের সময় সর্বোচ্চ আদালতের রায়কেও ‘ভুল’ বলে দাবি করেন তিনি। আদালতের রায় নিয়ে তার এ ধরনের মন্তব্যে বিরোধীদের চক্ষু রীতিমতো চড়কগাছ। একে বরিসের ‘ঔদ্ধত্য’ হিসেবে দেখছেন তারা।  

এদিন হাউজ অব কমন্সে (পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ) এমপিদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভয়াবহ এক জাতীয় অচলাবস্থার মুখে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করা সুপ্রিম কোর্টের এ রায় একটি ভুল। ’    

এ সময় আদালতে সরকারের পরাজয়ের পরও বরিসের মধ্যে কোনো অনুশোচনা না দেখে অবাক বনে যান এমপিরা। তারা এ ধরনের মন্তব্যকে ‘ঔদ্ধত্য’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন।  

প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির র‌্যাচেল রিভস এদিনের পার্লামেন্টকে ‘ভয়াবহ আর দর্শনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন।  

আরেক এমপি জেস ফিলিপস বলেন, আদালতের রায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া সাধারণ মানুষের কাছে ‘ভয়ঙ্কর’ হয়ে দেখা দিয়েছে। এজন্য তার মাফ চাওয়া উচিত।  

স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির জোয়ানা চেরি বলেন, কোনো অযোগ্য স্বৈরাচারীর কাছে যে রকম গলাবাজি প্রত্যাশা করা যায় এদিন পার্লামেন্ট তেমন অবস্থার মুখে পড়ে।  

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির রাজনৈতিক সম্পাদক বলেন, এদিন হাউজ অব কমন্স একটা হৈ-হল্লার জায়গায় পরিণত হয়। সব পক্ষই যার যার মতো কথা বলছিল।  

এদিকে এদিন বক্তব্যের সময় পার্লামেন্টের ছোট দলগুলোকে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট দিয়ে নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের আহ্বানও জানান বরিস।  

কিন্তু নতুন নির্বাচন চাইলেও বিরোধীরা বলছে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কার্যকরের ব্যাপারটি বাতিল না করা পর্যন্ত তারা এতে আগ্রহী নয়। সবার আগে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯ 
এইচজে/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।