কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা চারটি ভিন্ন ভিন্ন বাণিজ্যিক টি-ব্যাগকে ফুটন্ত পানিতে রাখার পর এর প্রভাব বিশ্লেষণ করেছেন। এমনকি এই পরীক্ষাটি তারা বার বার চালিয়ে একই ফল পেয়েছেন।
সম্প্রতি আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি জার্নাল এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কানাডার গবেষকদের এই তথ্য প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়েছে, অফিসে বা অন্য কোথাও চা পান করতে চাইলেই সহজ উপায়ের জন্য সবাই বেশি পছন্দ করেন টি-ব্যাগ। কিন্তু টি-ব্যাগটি যদি প্লাস্টিকের হয়, তাহলে সেটা শরীরের বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নাখাইল টুফেনজি জানিয়েছেন, একটি টি-ব্যাগ থেকে এক কাপ চায়ের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ১১০০ কোটি প্লাস্টিক কণা আমাদের শরীরে ঢুকে। যা গবেষণা অনুসারে অন্যান্য পানীয় বা খাবারের মধ্যে যে পরিমাণ প্লাস্টিক থাকে, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
তিনি বলেন, টি-ব্যাগ সাধারণত এক ধরনের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়। গরম পানির সংস্পর্শে এলে এই ব্যাগ থেকে প্লাস্টিক কণা গলে বেরিয়ে চায়ের সঙ্গে মিশে যায়। এরপর চুমুকে চুমুকে ঢুকে শরীরে।
তবে এই চা পান করার পর মানুষের স্বাস্থ্যে কী প্রভাব পড়ে, তা এখনও অজানা। যদিও বিজ্ঞানীরা এ বিষয়টি শিগগির বের করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন এবং আশ্বস্ত করেছেন, প্রভাব বের করতে চেষ্টা চলছে।
গবেষকদের পরামর্শ, অনেক চা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান টি-ব্যাগের ক্ষেত্রে কাগজের পরিবর্তে প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে জনসাধারণকেই সচেতন হতে হবে। কেননা, প্লাস্টিক আমাদের শরীরের এবং সমগ্র প্রকৃতির ক্ষতি করছে।
এর আগে বোতলজাত পানিতে প্লাস্টিকের প্রভাব নিয়ে পর্যালোচনা করেছিল জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এমনকি গতে মাসে সংস্থটি বলেছিল, মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো বর্তমানে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এই প্লাস্টিক কীভাবে মানব স্বাস্থ্যে প্রভাব বিস্তার করে, এ সম্পর্কে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
ডব্লিউএইচও-এর জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য নির্ধারণ বিভাগের পরিচালক মারিয়া নেইরা বলেন, আমাদের জরুরিভাবে মাইক্রোপ্লাস্টিকের স্বাস্থ্যের প্রভাব সম্পর্কে আরও জানতে হবে। কারণ এগুলো আমাদের পনীয়ের সঙ্গে সর্বত্র রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯
টিএ