দেশটি জানিয়েছে, বুধবার (০২ অক্টোবর) তারা সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য নতুন একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।
যদিও এর একদিন আগে মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) উত্তর কোরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সন হই জানিয়েছিলেন, তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে আবার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী।
কেসিএনএ জানায়, উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন সফল এই পরীক্ষার জন্য এর সঙ্গে জড়িত সব কর্মকর্তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বুধবার উত্তর কোরিয়ার ওনসান বন্দরের কাছের সমুদ্র থেকে সাবমেরিনের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম ‘পুকগুকসং-৩’ রাখা হয়েছে বলে জানায় কেসিএনএ।
কেসিএনএ এও জানায়, স্বল্পমাত্রার এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা দেশে নতুন এক অধ্যায় সূচনা করেছে। এটি উত্তর কোরিয়ার শত্রুপক্ষের হুমকিকে বাধা দেবে। একইসঙ্গে আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে সামরিক শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোর নিরাপত্তায় কোনো প্রকার প্রভাব পড়েনি।
এদিকে, ক্ষেপণাস্ত্রটি পরীক্ষার পরপরই জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়ার এ কাণ্ডের নিন্দা করে বলেছে, উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অবমাননা করেছে।
তবে এ অভিযোগকে ডিঙিয়ে গিয়ে উত্তর কোরিয়া জানায়, জাতিসংঘের এই প্রস্তাব তাদের আত্মরক্ষার অধিকারের লঙ্ঘন করে।
এর আগে সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীই বলেছিলেন, উভয়পক্ষের সম্মত একটি পরিস্থিতিতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবারও বিস্তর আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক। যদিও তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরই উত্তর কোরিয়া থেকে স্বল্প-পরিসরের দুটি ক্ষেপণাস্ত্র (প্রজেক্টাইল) উৎক্ষেপণ হয়েছে বলে খবর আসে।
এরও আগে গতবছর সিঙ্গাপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কিম জং উনের মধ্যে প্রথম বৈঠক হয়েছিল; পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে। সেসময় আলোচনায় কিম জং উন কোরিয়া উপদ্বীপকে ‘সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ’ নিয়ে সম্মতও হয়েছিলেন বলে জানা যায়। তবে এটি কীভাবে বাস্তাবায়ন হবে, সে ব্যাপারে উভয়পক্ষ কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পরেনি। বলা চলে, পরবর্তীতে পুরো প্রক্রিয়াই ব্যর্থ হয়েছিল।
এরপর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে দ্বিতীয় বৈঠকে বসেন শীর্ষ এই দুই নেতা। তখনও কোনো ফলপ্রসূ আলোচনা হয়নি বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়।
কোনো ধরনের চুক্তি বা অর্জন ছাড়াই শেষ হয় দুই দিনব্যাপী এ বৈঠকও। উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি উঠিয়ে নিতে কিমের আহ্বান ট্রাম্প প্রত্যাখ্যান করায় বৈঠকটি ‘নিষ্ফল’ হয় বলে মনে করা হয়। এরপরও এই দুই নেতার মধ্যেই আরও একটি ‘নিষ্ফল’ বৈঠক হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৯
এবি/টিএ