শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) চীনের অধীনে থাকা এই অঞ্চলে দ্রুত বাড়তে থাকা সহিংসতা ঠেকাতে বা নিয়ন্ত্রণে আনতে এমন ‘নাটকীয়’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়।
হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম জরুরি আইন প্রণয়ন করে সংবাদ সম্মেলনে, জনগণের স্বার্থে কর্তৃপক্ষ যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, বিগত ৫২ বছরের মধ্যে এই প্রথম জরুরি অধ্যাদেশ আইনটি কাজে লাগানো হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য বিক্ষোভকারী বিক্ষোভের সময় মুখোশ পরে থাকেন, যেন কর্তৃপক্ষ তাদের চিহ্নিত করে কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারে।
ক্যারি লাম বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, নতুন আইন মুখোশ পরিহিত সহিংস বিক্ষোভকারীদের প্রতিরোধ করতে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও আইন প্রয়োগে পুলিশকে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, হংকংয়ে অপরাধ প্রত্যর্পণ নিয়ে একটি প্রস্তাবিত বিল বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনটি চলছে প্রায় চার মাস ধরে। এক পর্যায়ে সহিংসতা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকে। শহরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। এছাড়া আমরা উদ্বিগ্ন, অনেক শিক্ষার্থী এমন সহিংস আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়ে তাদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।
হংকং নেত্রী বলেন, সহিংসতা বন্ধ করার জন্য সরকার যেকোনো ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত। জরুরি অধ্যাদেশ আইন জারি করার সিদ্ধান্তটি নেওয়া সহজ ছিলো না। কিন্তু জনগণের স্বার্থ রক্ষায় সিদ্ধান্তটি জরুরি।
‘আমরা ভীষণ গুরুতর জনহুমকির মধ্যে আছি। যত দ্রুত সম্ভব সহিংসতা প্রতিরোধ করে সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। ’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই আইন জারি করার মানে এটা নয় যে সরকার জরুরি অবস্থা জারি করেছে। অধ্যাদেশটি গুরুত্ববহ হলেও হংকং এ মুহূর্তে কোনো জরুরি অবস্থায় নেই।
এদিকে, মুখোশ পরিধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদে সহস্র মুখোশ পরিহিত বিক্ষোভকারী, বিশেষ করে কর্মজীবীরা রাস্তায় নেমেছেন। তাদের মধ্যে থাকা ২৭ বছর বয়সী শ্রমিক চ্যান বলেন, পুলিশের বর্বরতা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। মুখোশ পরিধানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আমাদের বিক্ষোভ না করতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
হংকংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে সহিংসতার ঘটনাগুলো ঘটেছে গত কয়েক মাসে। গত মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের একটি গ্রুপ পুলিশের ওপর আক্রমণ করলে গ্রুপের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়। ফলে রাস্তায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলে ঘণ্টাখানেক। এমনকি বিক্ষোভে গুলি বিনিময়ের ঘটনা এই প্রথম।
গুলিবিদ্ধ টনি স্যাং নামে ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দাঙ্গা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। যেটি প্রমাণিত হলে ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তার। স্যাং এ মুহূর্তে হাসপাতালে এবং তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৯
টিএ