এ অবস্থার মধ্যেই শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ভারত সফরে এলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ভারতের উপকূলীয় শহর চেন্নাইয়ে দুইদিনের সফরে স্থানীয় বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর চীনের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বনওয়ারিলাল পুরোহিত ও মুখ্যমন্ত্রী কে পল্লিনিস্বামী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সফরের বারোটা বাজিয়ে দিতে পারে চলমান কাশ্মীর সঙ্কট। তবে চেন্নাইয়ের ওই বৈঠকে আগ বাড়িয়ে জিনপিংয়ের কাছে কাশ্মীর ইস্যু তুলবে না ভারত। জিনপিং নিজে থেকে এ প্রসঙ্গ তুললে, তখন জম্মু-কাশ্মীরের ব্যাপারে ভারত তার অবস্থানের কথা জানাবে।
পূর্ব কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করলেও সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীর সঙ্কট নিয়ে কারো পক্ষে এখনও সরাসরি মুখ খুলেনি বেইজিং।
গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করা হয়। এরপর থেকে কার্যত ভারতের অন্য অংশসহ পুরো বিশ্ব থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কাশ্মীর।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের ভাষ্য, মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে গণহারে হিন্দুদের অভিবাসনের শঙ্কাও তৈরি হয়েছে। এছাড়া কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্যাতনের বিষয়টিও সামনে এসেছে।
উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তান দুদেশই সম্পূর্ণ কাশ্মীর অঞ্চলকে নিজেদের বলে দাবি করে। পাকিস্তান চীনের দীর্ঘদিনের মিত্র হলেও ভারত চায় কাশ্মীর সঙ্কট থেকে দূরে থাকুক চীন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এ সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কাশ্মীর ইস্যুতে কোনো আলোচনা হবে না। চীন ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক ইস্যুই প্রাধান্য পাবে তাদের এবারের সাক্ষাতে।
এর আগে ৯ অক্টোবর (বুধবার) বেইজিং সফরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে শি জিনপিংয়ের বৈঠক হয়। সেখানে শি জিনপিং বলেন, পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীরের নিরাপত্তা রক্ষায় দেশটির ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপে চীনের সমর্থন রয়েছে। চীন আশা করে, শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করবেন সংশ্লিষ্টরা।
এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভিশ কুমার বলেন, ভারত সবসময় স্পষ্ট করেই বলে এসেছে যে, জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিষয়টিতে আমাদের অবস্থান সম্পর্কে খুব ভালো করেই অবগত রয়েছে চীন।
‘আমরা মনে করি এ বিষয়ে অন্য কোনো দেশের নাক গলানো উচিত নয়। কারণ এটি একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়,’ যোগ করেন তিনি।
সফর শেষে শনিবার (১২ অক্টোবর) চীনা প্রেসিডেন্টের দেশে ফেরার কথা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৯
এফএম/এমএ