যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র তুরস্ক সফরের আগেই এমন বিবৃতি দেন এরদোগান। বুধবার (১৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এরদোগান বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিতে বলছে। কিন্তু আমরা এ ধরনের কোনো ঘোষণা দেবো না।
তিনি আরও বলেন, এই অভিযান বন্ধে তারা আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। এসব নিষেধাজ্ঞা আমাদের দমাতে পারবে না।
উল্লেখ্য, তুরস্কের এ অভিযান রুখতে সোমবার (১৪ অক্টোবর) তুরস্কের দুই মন্ত্রণালয় ও তিন মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন সরকার।
অন্যদিকে, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তুরস্কের চলমান অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। সিরিয়ায় নিযুক্ত মস্কোর বিশেষ দূত আলেকসান্দর লেভরেন্তেভ বলেন, তুরস্কের এ সামরিক অভিযান ‘অগ্রহণযোগ্য’। তাই আমরা এটা চলতে দিতে পারি না।
তুর্কি ও সিরিয়ান কর্মকর্তাদের ‘লাইন অব কন্ট্যাক্ট’ অনুযায়ী সংঘর্ষ এড়ানোর কথা ছিল। সীমান্ত অঞ্চল রক্ষার দায়িত্ব সিরীয় সরকারের। তাই আমরা কখনোই ওই অঞ্চলে তুরস্কের সামরিক অভিযানের চিন্তাকে সমর্থন দেইনি।
এদিকে, তুরস্কের এই অভিযান রুখতে কুর্দিদের সহায়তায় দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিরীয় সরকার। বাশার আল আসাদ সরকারের মিত্র রাশিয়াও তুরস্কের এ অভিযান রুখতে সিরীয় সরকারকে সহযোগিতা করবে। ইতোমধ্যে, তুর্কি অভিযান বন্ধে চুক্তি অনুযায়ী কুর্দিদের সহায়তা করার জন্য রাশিয়া সমর্থিত সিরীয় বাহিনী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের দিকে আগাচ্ছে।
এছাড়া, সিরীয় অভিযানে ব্যবহৃত হতে পারে-এমন আশঙ্কায় তুরস্ককে সামরিক অস্ত্রশস্ত্র আমদানির নতুন কোনো অনুমোদন দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।
এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব। তবে, আগের অনুমোদন অনুযায়ী, তুরস্কের কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রাখবে দেশটি।
গত ৯ অক্টোবর থেকে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সেনা অভিযান চালাচ্ছে তুরস্ক। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত ও প্রায় ৩ লাখের মতো মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে বলে খবরে বলা হচ্ছে। জাতিসংঘের মতে, এ অবস্থা চলতে থাকলে প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ ঘরহারা হতে পারে।
সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, কুর্দি মিলিশিয়ামুক্ত করে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলকে ‘নিরাপদ ভূমি’ ঘোষণা করতে চায় তুরস্ক। এ অঞ্চলটিকে তুরস্কে অবস্থানরত ৩৬ লাখ সিরীয় শরণার্থীর জন্য বাসযোগ্য করে তোলার পরিকল্পনা তুর্কি সেনাবাহিনীর।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
এফএম/এমএ/