মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের কার্যালয় (ইউএসটিআর) এবং চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের কর্মকর্তারা উচ্চ স্তরের টেলিফোন আলোচনার মাধ্যমে একটি বাণিজ্য চুক্তির কিছু অংশ ‘চূড়ান্তকরণের কাছাকাছি’ নিয়ে গেছেন। একইসঙ্গে তারা আরও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন এ বিষয়ে।
তবে অগ্রগতির ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে কোনো বিবরণ দেয়নি ইউএসটিআর। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে কৃষি পণ্য এই আলোচনার একটি প্রধান ক্ষেত্র।
ইউএসটিআর বিবৃতিতে বলেছে, তারা নির্দিষ্ট ইস্যুতে অগ্রগতি করেছে এবং উভয়পক্ষ চুক্তির কিছু ধারা চূড়ান্ত করার কাছাকাছি রয়েছে। এছাড়া এই উপ স্তরের আলোচনা অব্যাহত থাকবে। একইসঙ্গে এই মুখ্য কর্মকর্তারা অদূর ভবিষ্যতে আরও একটি আহ্বান জানাতে পারেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, ওয়াশিংটন এবং বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ‘প্রথম পর্যায়ের’ বাণিজ্য চুক্তির মূল বিষয়ের দিকে একমত হওয়ার জন্য কাজ করছে। এর আগে গত ১১ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, আগামী মাসে চিলির শীর্ষ সম্মেলনে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারব বলে আশা করছি।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা একটি পৃথক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেইজিং নিশ্চিত করছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির কিছু অংশের ‘প্রযুক্তিগত পরামর্শ’ মূলত সম্পন্ন হয়েছে।
চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলোচনায় উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্র চীনা তৈরি রান্না করা পোল্ট্রি ও ক্যাটফিশ পণ্য আমদানি করবে।
অন্যদিকে, চীন মার্কিন পোল্ট্রির বিরুদ্ধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে।
এদিকে, বেইজিং চায়, মার্কিন কিছু পণ্য আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক যেন বাতিল করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবারের আলোচনায় এ বিষয়টি তোলা হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়। এ দিন চীন দাবি করে, সয়াবিনের মতো মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যেন পদক্ষেপ নেয় এবং প্রতিশ্রুতি দেয়।
অন্যদিকে, ওয়াশিংটন চায়, বেইজিং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এবং একটি নির্দিষ্ট মূল্যের মধ্যে মার্কিন পণ্য কেনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হোক। যেখানে চীনা ক্রেতারা বাজারের অবস্থার ভিত্তি করে বিবেচনার মাধ্যমে পণ্য কিনতে পারবেন।
বলা হচ্ছে, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দুই দেশ নিজেদের প্রায় ১৬ মাসের বাণিজ্যযুদ্ধকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। যে বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্বের আর্থিক বাজারকে ঘিরে ধরেছে। সরবরাহের শৃঙ্খলা ব্যাহত করছে। একইসঙ্গে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ধীর করছে।
বেইজিংয়ের সঙ্গে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করতে ২০১৮ সাল থেকে চীনের রপ্তানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ শুরু করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এর জবাবে বেইজিংও মার্কিন পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ শুরু করে। এই বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনে চলতি বছরের মে মাসে ওয়াশিংটন-বেইজিং আলোচনায় বসলেও তখন কোনো চুক্তি হয়নি।
আরও পড়ুন>> চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধে ঝুঁকিতে বৈশ্বিক অর্থনীতি
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
টিএ