কিন্তু ক্ষমতাসীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের অনুরাগী ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ সফর ঘিরে রীতিমত উদ্বিগ্ন দেশটির রাজনীতিক মহল। সবাই এই আশঙ্কা করছেন যে, সফরকালে ট্রাম্প যেন বরিস জনসনের পক্ষে এমন কিছু বলে না বসেন, যেটাকে তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা হিসেবে অভিহিত করা যায়।
এমনিতেই বরিস জনসনের ব্যাপারে ট্রাম্পের বিশেষ পক্ষপাত বিভিন্ন সময় সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার চুক্তি- ব্রেক্সিট যে কোনোভাবেই বাস্তবায়নে ট্রাম্পের উস্কানি আছে বলেও অনেকের অভিযোগ। অন্যদিকে ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘খুব খারাপ’ হবেন বলেও কিছুদিন আগে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। এসব ছাড়াও বিভিন্ন সময় যুক্তরাজ্যের ব্যাপারে নানান বেফাঁস মন্তব্যের জন্য ব্রিটিশদের কাছে ভীষণ অজনপ্রিয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সফরকালে ট্রাম্প যেন কোনোভাবেই যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের ব্যাপারে নাক না গলান, সে জন্য কয়েকদিন আগেই তাকে অনুরোধ জানিয়েছেন বরিস জনসন। সে সময় মার্কিন কর্তৃপক্ষও খুব বড় মুখ করে বলে, অন্য দেশের নির্বাচনে নাক গলানোর কোনো আগ্রহ আমাদের প্রেসিডেন্টের নেই।
কিন্তু, কথায় আছে- যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই রাত হয়। যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল এরই মাঝে তা বাস্তবে পরিণত করেছেন ট্রাম্প।
ন্যাট সম্মেলন ঘিরে সফরকালে মঙ্গলবার (ডিসেম্বর ৩) লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেন, আমি মোটেই যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবো না, বা এ নিয়ে কোনো জটিলতা তৈরি করবো না। কিন্তু, আমি মনে করি, (প্রধানমন্ত্রী হিসেবে) বরিস খুবই দক্ষ, আর আগামীতেও সে খুবই ভালো কাজ করবে।
শুধু তাই নয়, এসময় বরিসের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী প্রচারণা ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পক্ষেও নিজের সমর্থন ব্যক্ত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এর আগে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন অভিযোগ তোলেন, যুক্তরাজ্যকে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে উস্কাচ্ছেন ট্রাম্প। এরপর ব্রিটেনের স্বাস্থ্যখাতসহ সবকিছু নিয়েই বাণিজ্য করবে আমেরিকা। স্বাস্থ্যখাতের মতো মানবিক একটি খাতকেও বাণিজ্যের অংশ করা হবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন বরিস জনসন, ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয়েই।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যখাতকে বাণিজ্যের অংশ করা হবে কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, না না একেবারেই না। এটা নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। এটা নিয়ে আমি চিন্তাও করিনি, কসম।
‘এ খাত নিয়ে আমাদের কিচ্ছু করার ইচ্ছে নেই। আমরা চাইবোই না। আপনারা যদি এটা আমাদের এমনি এমনিও দেন, তবুও আমরা এটা নিয়ে আগ্রহ দেখাবো না। ’
আগামীতে লেবার পার্টির জেরেমি করবিন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হলে তার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, আমি যে কারো সঙ্গে কাজ করতে পারি। কাজ করার ব্যাপারে আমি খুবই সহজ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
এইচজে