ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

এবার ব্রেক্সিট রুখবে কে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
এবার ব্রেক্সিট রুখবে কে? ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ছবি: সংগৃহীত

ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে অনেক দিন ধরেই উত্তাল যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের আহ্বানে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো দেশটিতে। সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়েছে জনসনের কনজারভেটিভ পার্টি। ফলে তার চুক্তি অনুযায়ী ব্রেক্সিট সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পশ্চিম লন্ডনের আক্সব্রিজে নিজ আসনে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর জনসন বলেন, ফলাফল দেখে মনে হচ্ছে কনজারভেটিভ সরকার ব্রেক্সিটের পক্ষে জোরালো স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যেই ব্রেক্সিট সম্পন্ন করার অঙ্গীকার তার।

নির্বাচনী প্রচারণায় জনসনের স্লোগানই ছিল ‘গেট ব্রেক্সিট ডান’ বা ব্রেক্সিট সম্পন্ন করো।

চলতি বছরের জুলাই মাসে ব্রেক্সিট ইস্যুতে দীর্ঘ টানাপোড়েনের জেরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে পদত্যাগ করার পর সাধারণ নির্বাচন ছাড়াই কনজারভেটিভ পার্টি জনসনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করে। এবার সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বহাল রইলেন জনসন।

অন্যদিকে, এ নির্বাচনে গত কয়েক যুগের মধ্যে সবচেয়ে কম আসন পেয়েছে লেবার পার্টি। ভোটের ফলাফল জেনে প্রধান বিরোধীদল ও লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেন, আজকের (নির্বাচনের) রাত লেবার পার্টির জন্য ভীষণ হতাশার। তার দাবি, ব্রেক্সিট সংক্রান্ত যুক্তি-তর্কের আড়ালে হারিয়ে গেছে অন্য বিষয়গুলো।

ব্রেক্সিট হওয়ার কথা রয়েছে ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি। ইতোমধ্যে জনসন ইইউ’র সঙ্গে একটি ব্রেক্সিট চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন, কিন্তু চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য সংসদের অনুমোদন লাগবে।

তবে, এ নির্বাচনের ফলাফল সংসদের ওপর কনজারভেটিভদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। এতে নিজের চুক্তি অনুযায়ী ব্রেক্সিট করার সুযোগ বাড়বে জনসনের। হাউস অব কমন্সে কনজারভেটিভরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় ব্রেক্সিট চুক্তি করতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না তাকে।

ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই চুক্তিসহ ব্রেক্সিট বিল হাউস অব কমন্সে নতুন করে তুলবে সরকার। আগামী ৩১ জানুয়ারি ‘ব্রেক্সিট দিবসের’ মধ্যেই বিলটি পাস করার লক্ষ্য থাকবে তাদের। এ সময়ের মধ্যে বিলটি পাস হয়ে গেলে ইইউ’র সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলাপ-আলোচনা শুরু করতে পারবে যুক্তরাজ্য। লক্ষ্য থাকবে আগামী জুনের মধ্যে একটি চুক্তিতে আসা।

২০২০ সালের ডিসেম্বর নাগাদ বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করতে পারলে বাণিজ্যিকভাবে ইইউ’র সঙ্গে নতুন সম্পর্কে যাবে দেশটি। কিন্তু এসময়ের মধ্যে কোনো ধরনের বাণিজ্য চুক্তি করতে না পারলে দু’টি পথই খোলা থাকবে দেশটির জন্য। হয় চুক্তিহীন ব্রেক্সিট করতে হবে, অথবা চুক্তিসহ ব্রেক্সিট করার সময়সীমা বাড়াতে হবে। অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি হলো ব্রেক্সিট সম্পন্ন হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ মাত্র।

তবে, কনজারভেটিভরা স্পষ্ট করেই বুঝিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ হয়ে সমন্বিত বাজার ও কাস্টম ব্যবস্থায় আর থাকতে চান না তারা। ইউরোপীয়ান বিচারিক আদালতের প্রভাব থেকেও তারা নিজেদের পুরোপুরি মুক্ত করতে চান।

অপরদিকে, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের অংশ হিসেবে ব্রেক্সিট করলেও, রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড থাকছে ইইউ’র সঙ্গে। এছাড়া, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে ৪৮টি আসনে নির্বাচিত হওয়ায় ব্রেক্সিট ইস্যুতে স্কটল্যান্ডের ভবিষ্যৎ দেশটির নিজের হাতেই থাকবে বলে মনে করছেন স্কটল্যান্ডের বর্তমান ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা ফার্গুসন স্টারজন।

সুতরাং, সবদিক বিবেচনা করেই চুক্তিতে যেতে হবে ব্রিটেনকে। কিন্তু সময় খুব স্বল্প। এ স্বল্প সময়ের মধ্যেই ইইউ’র সঙ্গে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে যাওয়াটা খুব একটা সহজ হবে না। মার্চের দিকে ইইউ’র সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে ব্রিটেনের আনুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: জনসনের জয়ে ট্রাম্পের নজর বাণিজ্যে!
>> একচেটিয়া জয় পেলো বরিসের কনজারভেটিভ

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।