আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে ভারতের প্রধান বিচারপতি শারদ অরভিন্দ ববদে বলেন, ‘দাঙ্গা’ অবশ্যই বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া (জেএমআই) বিশ্ববিদ্যালয় ও উত্তর প্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনা তদন্ত করার অনুরোধ জানালে তিনি এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্টের (এফআইআর) শুনানি হবে।
বিক্ষোভকারীদের ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি বলেন, শিক্ষার্থীরা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিস্থিতি নেই। আগে দাঙ্গা বন্ধ করতে হবে।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশের সহিংসতার বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ জানিয়েছেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং ও কলিন গনসালভেস।
প্রধান বিচারপতি বলেন, জনসম্পত্তি কেনো ধ্বংস করা হলো? বাস পুড়িয়ে দেওয়া হলো। আমরা নজর রাখছি এবং শান্ত মনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যারা দাঙ্গা শুরু করেছে, আগে তাদের থামতে হবে।
আইনজীবী কলিন গনসালভেস বলেন, শিক্ষার্থীদের আটক করে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য তদন্ত করতে হবে।
কয়েকজন অবসারপ্রাপ্ত বিচারককে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করতে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন গনসালভেস। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা সেটা করবো। কিন্তু আগে পরিস্থিতি শান্ত হোক। বিক্ষোভ ও সহিংসতা চলতে থাকলে আমরা তা শুনবো না।
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে সমর্থন জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, কেউ যদি রাস্তায় নামতে চায়, তার কোর্টে আসার দরকার নেই।
অপরদিকে ইন্দিরা জয়সিং বলেন, সুপ্রিম কোর্টকে অবশ্যই দেশজুড়ে চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ধরনের সহিংসতায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
রোববার বিকেলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে জামিয়া মিল্লিয়া এবং আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।
সম্প্রতি ভারতীয় সংসদে পাস হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। নতুন পাস হওয়া আইনে ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসিসহ অমুসলিম অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ আইনটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
এফএম