তাই আসাম এনআরসির তথ্য যাচাইয়ের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে যাচ্ছে তারা। এরপর তথ্যে ত্রুটি পেলে এটি বাতিল করে নতুন এনআরসি করার দাবি জানাবে।
সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) আসাম সরকারের মুখপাত্র অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা সংবাদ সম্মেলন ডেকে বলেন, প্রতীক হাজেলার নেতৃত্বে হওয়া এনআরসি সঠিক বলে রাজ্য সরকার মানে না। এমনকি আসু এবং এনআরসি মামলার মূল আবেদনকারী ‘আসাম পাবলিক ওয়ার্কস’ও নতুন এনআরসি চায়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের কাছে প্রথমে ২০ শতাংশ তথ্য পুনরায় যাচাইয়ের আবেদন জানাবে। এরপর বড় ধরনের ত্রুটি পেলে বর্তমান এনআরসি বাতিল করে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার দাবি জানাবে।
এই এনআরসির ২০ শতাংশ তথ্য পুনরায় যাচাইয়ের আবেদন সুপ্রিম কোর্টে এর আগেও করা হয়েছিল। যা খারিজও করেছিলেন ভারতীয় সর্বোচ্চ আদালত। এ বিষয়ে হিমন্তবিশ্ব বলেন, সুপ্রিম কোর্টে আমাদের হলফনামা দেওয়াই আছে। তা নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এর মতামতও রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতেই পরের শুনানিতে আবেদন জানানো হবে।
এনআরসি করা নিয়ে এক সময় কৃতিত্ব চাইতো কেন্দ্র ও রাজ্য বিজেপি সরকার। কিন্তু বর্তমানে গোটা দেশে এনআরসি করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি প্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মুখে দুই সুর কেনো- এমন প্রশ্নে প্রভাবশালী বিজেপি নেতা হিমন্তবিশ্ব বলেন, আসাম ও দেশের পরিস্থিতি ভিন্ন। আসামের এনআরসি তো মনমোহন সিংহ ও কংগ্রেস সরকারের কৃতিত্ব। আমরা ২০০৫ সালে কংগ্রেসের নেওয়া সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন করেছি মাত্র।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর রাজ্যসভায় অমিত শাহ বলেছিলেন, গোটা দেশের সঙ্গে নতুন করে আসামের নাগরিকত্ব তালিকা প্রকাশ করা হবে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তি, আসাম চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চকে এই এনআরসি তৈরির ভিত্তিবর্ষ বলে ধরা হয়। কিন্তু ভবিষ্যতে দেশের অন্য সব রাজ্যে যখন এনআরসির কাজ শুরু হবে, তখন অতীতের আরেকটি দিনকে ধরে তার ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করতে হবে। এতে করে এক দেশে দুটি ভিত্তিবর্ষ হয়ে যাচ্ছে। যা হতে পারে না। তাই গোটা দেশে যে ভিত্তিবর্ষ ধরা হবে, সে হিসেবে আবার আসামে নতুন তালিকা তৈরি করা হবে।
কোন বছরের কোন তারিখের ভিত্তিতে এই কাজ শুরু হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ আর ভিত্তিবর্ষ হচ্ছে না।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রোববার (২২ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে ঠিক উল্টো বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সারাদেশে এখনই এনআরসি করার বিষয়টি চূড়ান্ত নয়। অর্থাৎ আসামের এনআরসি থাকছেই।
সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে আসামে হওয়া এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ যান প্রায় ১৯ লাখ মানুষ। এতে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বড় অস্বস্তিতে পড়েন শাসক দল বিজেপির নেতাকর্মীরাও। নাম বাদ পড়ায় দলটির শীর্ষ নেতাদের অবগত করেন তারা। এছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের চাপও আছে বিষয়টি নিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯
টিএ