বুধবার (১০ জুন) বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে শেষে দিল্লির উত্তর-পূর্ব প্রান্তে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের বেশির ভাগই ছিলেন মুসলিম।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, দাঙ্গা শুরুর আগে দিল্লিতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যখন তুমুল প্রতিবাদ চলছিল, তখন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরাও প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে নানা উসকানিমূলক বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছিলেন। দিল্লি বিজেপির বিতর্কিত নেতা কপিল মিশ্রা পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েই হুমকি দিয়েছিলেন, বিক্ষোভকারীরা রাস্তা খালি না-করে দিলে তারা জোর করে তাদের তুলে দেবেন, পুলিশের কথাও শুনবেন না। এর কিছুদিন আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এই প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, দেশের সঙ্গে যারা বেইমানি করছে তাদের গুলি করে মারা হবে।
তবে দিল্লি পুলিশের চার্জশিটে দাঙ্গা কীভাবে হল, তা নিয়ে যে দীর্ঘ ঘটনা পরম্পরা বর্ণনা করা হয়েছে তাতে এসব বক্তৃতার কোনো উল্লেখই নেই।
দিল্লির দাঙ্গাপীড়িতদের হয়ে অনেকগুলো মামলা লড়া মানবাধিকার আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেস বলেন, দাঙ্গার সময় পুলিশের বিরুদ্ধেই মারধর, অগ্নিসংযোগ বা ভয় দেখানোর অন্তত ৮০ থেকে ৯০টি অভিযোগ এসেছে। কিন্তু পুলিশ একটারও এফআইআর নিতে রাজি হয়নি। আর ভিক্টিমদের বয়ানের ভিত্তিতে নয়, পুলিশ তদন্তটা সাজিয়েছে তাদের বানানো গল্প আর সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে। অথচ আমরা সবাই জানি দাঙ্গার মূলে ছিল বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের ঘৃণা ছড়ানো ভাষণ।
দিল্লিতে শাহীনবাগ, জামিয়া মিলিয়া বা জাফরাবাদের মতো যারা নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, দিল্লি পুলিশ দাঙ্গায় তাদের ভূমিকা বিশদে বর্ণনা করেছে। যার প্রায় সবাই মুসলিম। এর আগে দাঙ্গার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে আম আদমি পার্টির বহিষ্কৃত কাউন্সিলর তাহির হোসেনকেও তারা শনাক্ত করেছে।
তবে চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দেওয়ার জন্য দিল্লি পুলিশ যে ৯০ দিনের সময় পেয়েছে তার অবশ্য এখনও কিছুটা বাকি আছে। কিন্তু এ যাবত যে ৭০টি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে তা থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে বিজেপি নেতারা দাঙ্গায় উসকানির অভিযোগ থেকে শেষ পর্যন্ত রেহাই পেয়েই যাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৪ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২০
ডিএন/আরএ