ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, গত রোববার (০৫ জুলাই) লাদাখ সীমান্ত বিতর্ক ও দুই দেশের মুখোমুখি অবস্থান প্রসঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে টেলিফোনে দুই ঘণ্টাব্যাপী দীর্ঘ এক বৈঠক করেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও লাদাখ সীমান্ত বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি অজিত দোভাল। সে সময় তারা সীমান্ত উত্তেজনা নিরসন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও নিরাপত্তার ব্যাপারে সহমত পোষণ করেন।
টেলিফোনে ওই বৈঠকের পরপরই দ্রুততম সময়ে উভয় দেশ লাদাখ সীমান্তের এলএসি থেকে নিজেদের সেনা সরিয়ে নেবে বলে আশার সঞ্চার হয়। এবং ঠিক তাই, এর পরপরই এলএসি থেকে সরে যেতে থাকে চীনা লাল ফৌজ ও ভারতীয় জওয়ান।
অজিত দোভাল- ওয়াং ইর ওই বৈঠক প্রসঙ্গে গত সোমবার (০৬ জুলাই) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, রোববারের ফোনালাপে অজিত দোভাল ও ওয়াং ই লাদাখ সীমান্ত বিতর্ক প্রসঙ্গে অনেক খোলামেলা ও গভীর আলাপ-আলোচনা করেন। এসময় দুই দেশই এলএসি থেকে ধারাবাহিকভাবে নিজেদের সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে সহমত প্রকাশ করে।
ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কূটনৈতিক ওই তৎপরতায় অজিত দোভাল সফলতার সঙ্গে চীনকেই প্রথমে লাদাখ থেকে সেনা সরানোর কাজটি শুরু করার ব্যাপারে সম্মত করান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতও সেনা সরাবে বলে জানান তিনি।
ভারত সরকার জানায়, এরইমধ্যে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা থেকে নিজেদের সীমানার দুই কিলোমিটার ভেতরে সরে গেছেন চীনা সেনারা। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পিপি-১৪, পিপি-১৫ ও অন্যান্য অংশ থেকেও ধারাবাহিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে চীন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতও গালওয়ান উপত্যকার এলএসি থেকে নিজেদের সীমান্তের ২ কিলোমিটার ভেতরে সেনা সরিয়ে নিয়েছে।
সম্প্রতি লাদাখ সীমান্ত বিতর্কের জেরে মুখোমুখি অবস্থান নেন চীন ও ভারতের সেনারা। এরই এক পর্যায়ে সংঘর্ষে চীনা সেনাদের হাতে ২০ ভারতীয় জওয়ান নিহত হন। ওই সংঘর্ষে চীনেরও বেশ কয়েক সেনা নিহত হন বলে ভারতের দাবি। যদিও এ ব্যাপারে চীনের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি।
এদিকে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে গোটা ভারত। ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদী সরকার।
এরপর গত শুক্রবার (৩ জুলাই) সেনাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে ও তাদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে লাদাখের সেনা ছাউনি সফর করেন মোদী।
সে সময় তিনি চীনকে ইঙ্গিত করে হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেন, আগ্রাসনের যুগ শেষ। এখন ভারত জল, স্থল, অন্তরীক্ষে নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে। যে কোনো আঘাত এলে ভারত তার জবাব দিতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০২০
এইচজে/