ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

চীনা ‘ঋণ-ফাঁদ কূটনীতি’ নিয়ে অস্বস্তিতে নাইজেরিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২০
চীনা ‘ঋণ-ফাঁদ কূটনীতি’ নিয়ে অস্বস্তিতে নাইজেরিয়া

আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ নাইজেরিয়া। আশঙ্কা কোনোভাবেই পিছু ছাড়ছে না দেশটির।

চীনা ঋণ-ফাঁদ কূটনীতিই এর মূল কারণ।  

চীনের অশুভ ঋণের ফাঁদে পড়ে সার্বভৌমত্ব ‘হারানোর’ আশঙ্কায় অস্বস্তিতে রয়েছে দেশটি।

এ ভয় থেকে দেশটির আইনপ্রণেতারা ইতোমধ্যে চীনা ঋণ চুক্তির বিষয়ে তদন্তের জন্য আওয়াজ তুলছেন। খবর এএনআইয়ের।

ঋণ সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলে সার্বভৌমত্বে আঘাত আসে কি-না তা নিয়ে শঙ্কিত দেশটির আইনপ্রণেতারা।

দেশটির হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সদস্যরা নাইজেরিয়া এবং চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের মধ্যে হওয়া কমার্শিয়াল লোন অ্যাগ্রিমেন্টের অনুচ্ছেদ ৮(১) এর ধারার বিষয়ে সরকারের সমালোচনা করেছে।

২০১৮ সালে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী চীনের ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ যদি সময়মতো শোধ করতে সমর্থ না হয় নাইজেরিয়া, তবে দেশটির সার্বভৌমত্ব ঝুঁকিতে পড়বে।

চীন বর্তমানে নাইজেরিয়ার বৃহত্তম বিদেশি বাণিজ্যিক অংশীদার এবং সবচেয়ে বেশি ঋণদাতা।

ওয়েস্ট আফ্রিকান নেশনস ম্যানেজমেন্ট অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিপক্ষীয় ঋণের ৮০ শতাংশই চীনের কাছ থেকে নিয়েছে নাইজেরিয়া। আফ্রিকার সর্বোচ্চ তেল উৎপাদনকারী দেশটিকে চীন এসব ঋণ দিয়েছে রেলপথ নির্মাণ, পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং বিমানবন্দর তৈরির জন্য।

দেশটিতে এসব ঋণ নিয়ে বিতর্কের শুরু চীনের ‘ঋণ-ফাঁদ কূটনীতি’র কারণে। ব্যয়বহুল প্রকল্পগুলোতে উদ্যোগী হয়ে সংযুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আফ্রিকার দেশগুলোকে ঋণের ফাঁদের ফেলার তোড়জোড় চালাচ্ছে চীন।

আফ্রিকায় চীনের উপস্থিতি সম্পর্কে একটি প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, মহাদেশটিতে বেইজিংয়ের জাল বিস্তারের অন্যতম কারণ হলো সেখানে দেশটির স্বার্থ।  

যদিও এ বিষয়ে চীনের দাবি ভিন্ন।  

চীনের দাবি, আফ্রিকানদের স্বার্থেই তারা সেখানে রয়েছে।

বর্তমানে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশকে দেওয়া চীনা ঋণ দেশটির পক্ষে লাভজনক হবে না বলে ধারণা। এরপরও দেশটি থেমে নেই। এর কারণ হলো ‘ঋণ-ফাঁদ কূটনীতি’। কেনিয়া এবং ইথিওপিয়া ইতোমধ্যে এ ফাঁদে পড়ে হাঁসফাঁস করছে। জিবুতিও পড়েছে চীনা ঋণের ফাঁদে।  

চীনা ঋণ ফাঁদের বিষয়ে ইতোমধ্যে নাইজেরিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এর পাশাপাশি চীনের বিপজ্জনক ঋণ বিষয়ে তৃতীয় বিশ্বের অন্য দেশগুলোকে সতর্ক হতে বলেছে সংস্থাটি। একইসঙ্গে আইএমএফ জোর দিয়ে বলেছে যে, চীনা ঋণদাতারা অস্থিতিশীলতা অথবা দুর্বলতা তৈরি করে।

সাম্প্রতিক সময়ে নাইজেরিয়া বড় অবকাঠামোগত প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে এবং ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক নির্মাণের জন্য চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতার দিকে ঝুঁকছে। ইতোমধ্যে নাইজেরিয়ার কাছে ৩১ মার্চ পর্যন্ত চীনের পাওনা ৩.১ বিলিয়ন ডলার। আরও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে দেশটি। বিশ্লেষকদের ধারণা, ঋণের চাপে নাইজেরিয়াকে বগলদাবা করতে চাইছে চীন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২০
এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।