ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

নিজের স্বামী বেছে নিতে পারবেন প্রাপ্তবয়স্ক নারী: এলাহাবাদ হাইকোর্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
নিজের স্বামী বেছে নিতে পারবেন প্রাপ্তবয়স্ক নারী: এলাহাবাদ হাইকোর্ট

ভারতে ভিন্ন ধর্মের বিয়ে ঠেকাতে নতুন আইন করায় ও স্থানীয় প্রশাসন এ ধরনের দম্পতিকে হয়রানি করায় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেছেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

আদালত বলেছেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী যদি তার স্বামী নিজেই পছন্দ করতে পারেন এবং তার সঙ্গে জীবন কাটাতে চান, সেই স্বাধীনতা রয়েছে তার।

লাভ জিহাদের অজুহাতে উত্তরপ্রদেশের পর একের পর এক বিজেপিশাসিত রাজ্য যখন বিয়ের নামে ধর্মান্তরণ প্রতিরোধী আইন কার্যকর করতে ওঠে-পড়ে লেগেছে, সেসময় ভিন্ন ধর্মের এক দম্পতিকে নিয়ে মামলার শুনানিতে এ রায় দেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

আদালত সাফ জানিয়েছেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর সিদ্ধান্তে কোনো তৃতীয় ব্যক্তির নাক গলানোর অধিকার নেই।

উত্তরপ্রদেশে ধর্মান্তরণ আইন কার্যকর হওয়ার আগে ইটায় সালমান নামে এক মুসলিম তরুণের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন শিখা নামে এক হিন্দু তরুণী। তা নিয়ে সেপ্টেম্বর মাসে সালমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন শিখার পরিবারের লোকজন।

অভিযোগ করেন, তাদের মেয়েকে অপহরণ করেছেন সালমান। জোর করে শিখাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেছেন তিনি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শিখাকে শিশুকল্যাণ কমিটির হেফাজতে পাঠিয়ে দেন জেলার মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। সেখান থেকে বাবা-মায়ের হাতেই আসে শিখার হেফাজতের ভার।

জেলা আদালতের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সম্প্রতি এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সালমান। বেআইনিভাবে তার স্ত্রীকে আটকে রাখা হয়েছে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সেই মামলার শুনানিকালে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন এবং মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকেই একহাত নেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি পঙ্কজ নকভি ও বিবেক আগারওয়ালের ডিভিশন বেঞ্চ।

তারা জানান, মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট এবং শিশুকল্যাণ কমিটি আইন-কানুন সম্পর্কে কতটা শ্রদ্ধাশীল তা তাদের সিদ্ধান্তে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে শিখার সঙ্গেও একদফা কথা বলেন দুই বিচারপতি।  

আদালতে শিখা জানান, সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছায় সালমানকে বিয়ে করেছেন তিনি।

আদালতে স্কুলের সার্টিফিকেট জমা দিয়ে শিখা জানান, ১৯৯৯ সালের ৪ অক্টোবর তার জন্ম। সেই হিসাবে আইনত প্রাপ্তবয়স্ক তিনি। তার পরেও জোর করে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করা হচ্ছে তাকে।

পুলিশকেও তিরস্কার করেন আদালত। সালমানের সঙ্গে শিখা শ্বশুরবাড়ি না ফেরা পর্যন্ত ওই দম্পতিকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেন দুই বিচারপতি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।