ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও রোজা রাখতে উইগুরদের ভয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২১
নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও রোজা রাখতে উইগুরদের ভয়

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে (এক্সইউআর) পবিত্র রমজান মাসে রোজার ওপর নিষেধাজ্ঞা কমেছে। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, বাসিন্দারা রোজা থেকে বিরত থাকছেন।

স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘকালীন 'উগ্রপন্থী' হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এবং আটক হওয়ার ভয়ে রোজা রাখছেন না।

বহু বছর ধরে উইঘুর এবং অন্যান্য তুর্কি মুসলমানদের চীন সরকার ধর্মীয় নিপীড়ন এবং বিধি-নিষেধের আওতায় রেখেছে। রমজান পালন করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এখানে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদেরও রোজা রাখতে নিষিদ্ধ করা হতো। অঞ্চলটির কয়েকটি এলাকায় মসজিদে প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং রেস্তোঁরাগুলো খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।  

উইঘুর অবসরপ্রাপ্তদের ও বয়স্কদের প্রায়শই রমজানের আগে রোজা না রাখার প্রতিজ্ঞা করতে বাধ্য করা হয়। তাদের বৃহত্তর সম্প্রদায়ের প্রতি উদাহরণ স্থাপনের জন্য নামাজ না পড়তে ও অন্যদেরও নামাজ থেকে বিরত থাকতে বলার জন্য দায়িত্বও দেওয়া হয়।

গত বছরের ২৩ এপ্রিল থেকে ২৩ মে ছিল রমজান। এ সময় আরএফএ (রেডিও ফ্রি এশিয়া) জানতে পেরেছিল যে কাশগড় (চায়নিজ, কাশিয়ান ভাষায়) প্রদেশের মাকিত (মাইগাইতি) জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮৮ শতাংশ মানুষ উইঘুর। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর এ এলাকার বাসিন্দাদের রোজা রাখছে এমন লোকের সন্ধান জানাতে বলা হয়। বাসিন্দাদের বলা হয়েছিল যে তারা রোজার জন্য শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে। এমনকি তাদের একটি বৃহত্তর ইন্টার্নমেন্ট ক্যাম্পে পাঠানোর  হুমকিও দেওয়া হয়। ধারণা করা হয়, এ ক্যাম্পে ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ১.৮ মিলিয়ন উইঘুর এবং অন্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের আটকে রেখেছে চীন সরকার।

আরএফএ এ সময় কাশগরের পিজিওয়াত (জিয়াশি) কাউন্টির এক দলপ্রধানের সঙ্গেও কথা বলেছিল। তিনি জানান, তাঁর জনপদের বাসিন্দাদের রোজ ভোরে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যার রাজনৈতিক অধ্যয়নে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারণ বাসিন্দাদের রোজা রাখতে বাধা দেওয়ার জন্য এটি দরকার ছিল।

এ বছরের রমজানে এ অঞ্চলের পরিস্থিতি তদন্তের জন্য ১২ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়। আরএফএ ধর্মীয় বিষয় এবং ইউনাইটেড ফ্রন্টের অফিসারসহ সরকারী দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে। তবে তাদের মধ্যে অনেকেই পূর্ববর্তী বছরের মতো প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করে।

আরএফএ সম্প্রতি কাশগরের কোনা শেহের (শুফু) কাউন্টিতে তোককুজাক (তুওকেজাক) জনপদে এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তিনি বলেছেন- পরপর তিন বছর কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞার পর ২০২০ সাল থেকে তাঁর অঞ্চলে রোজার ওপর নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল হয়েছে। সূত্র: রেডিও ফ্রি এশিয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২১
নিউজ ডেস্ক 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।