ঢাকা, বুধবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

তালেবানের হামলা অব্যাহত, কাবুলের দিকে ছুটছে মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২১
তালেবানের হামলা অব্যাহত, কাবুলের দিকে ছুটছে মানুষ

উত্তর আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় শহর মাজার-ই-শরীফ। কয়েক সপ্তাহ ধরে তালেবানরা শহরটির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

গত সপ্তাহে হেরাত ও কান্দাহার দখল করার পর মাজার-ই-শরীফ, জালালাবাদ এবং কাবুল হলো প্রধান শহরগুলোর কয়েকটি, যা এখনো সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়ে গেছে। তবে তালেবানরা ইতোমধ্যে রাজধানী কাবুলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

শনিবার (১৪ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, মাজার-ই-শরীফের বাসিন্দাদের আতঙ্ক শুরু হয় তখনই যখন গত সপ্তাহে তালেবানরা দেহদাদী জেলায় হামলা শুরু করেছিল। তবে সশস্ত্র গোষ্ঠীর আক্রমণ ব্যর্থ হলেও এটি আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ও সাস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর বাসিন্দাদের জন্য বড় একটি শঙ্কা তৈরি করেছে।

আবদুল ওয়াহাব নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনি কাবুল থেকে একটি ব্যবসায়িক সফরে গিয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) খবরটি যখন ছড়িয়ে পড়ে তাকে বলা হয়, অবিলম্বে বিলাসী হোটেল ছেড়ে তিনি যেন বন্ধুদের বাড়িতে আশ্রয় নেন। কারণ ধনী ও ক্ষমতাবানরা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন। পরে সেই রাতটি তিনি বন্ধুদের সঙ্গে কাটিয়েছিলেন। তিনি বুঝতে পারেন বিমানবন্দর বন্ধ হতে পারে এবং এর আগেই তাকে বাড়িতে ফিরে যেতে হবে।  

তিনি জানান, এটিএম বুথগুলোতে টাকা ছিল না। ব্যাংকে ছিল ছিল লম্বা লাইন। বন্ধুদের কাছে টাকা ধার করতে হয় তাকে। এছাড়া বিমানবন্দরগুলোতে টিকিট না থাকার ভোগান্তির কথাও জানান তিনি। বিমানবন্দরের এমন একটি চিত্র তিনি উপস্থাপন করেন তাতে বোঝা যায় মানুষের ভিড় এতবেশি ছিল যে বোর্ডিং পাস পাওয়ার পরেও অনেকে ফ্লাইটে উঠতে পারছিল না।  

অপরদিকে আফগানিস্তানের এক শহর থেকে অন্য শহর বা দেশে যাওয়ার উন্মাদনায় বেড়ে গেছে বিমানের টিকিটের দাম। অনলাইনে দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টিকিটগুলো। প্রত্যেকে কোনো না কোনোভাবে ভিসা, টিকিট পাওয়ার চেষ্টা করছেন।

মাজার-ই-শরীফের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, এখানকার সব লোক পালিয়ে গেছে। কেউ নেই। কিন্তু আমাদের কী হবে? যারা টিকিট কিনতে পারব না? সৃষ্টা আমাদের দয়া করুক।  

এদিকে আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকার নিয়ন্ত্রণ যখন তালেবানদের হাতে তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি টিভিতে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন, সামরিক বাহিনীকে পুনরায় সংহত করা এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ভাষণে তিনি পদত্যাগ করবেন কিনা বা বর্তমান পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব নেবেন কিনা এমন কোনো ইঙ্গিত দেননি।

প্রেসিডেন্ট আশরাফ বলেন, যুদ্ধ অবসানের চেষ্টায় ‘আলোচনা’ চলছে। আন্তর্জাতিক অংশীদার ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে পরামর্শ করার কথা বলেন তিনি। তবে তালেবানদের আগ্রাসনের মুখে দেশটির রাজধানী কাবুল কার্যত ঘেরাও হয়ে পড়েছে। আফগান সামরিক বাহিনীকেই হয়তো কাবুলকে রক্ষার শেষ লড়াইয়ে নামতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২১
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।