সুদানে অন্তর্বর্তী সরকার বিলুপ্ত করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সেনাবাহিনী। দেশটিতে মূলত সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদুক ও তার কয়েকজন মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে সেনাবাহিনী। তাদেরকে কোথায় রাখা হয়েছে বা কী ঘটেছে তাদের ভাগ্যে, তা এখনও জানা যায়নি।
বলা হচ্ছে, তাদেরকে গৃহবন্দি করা হয়েছে।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহান, যিনি বেসামরিক নেতাদের সঙ্গে একটি যৌথ কাউন্সিলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন, তিনি এ পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক অন্তর্দ্বন্দ্বকে দায়ী করেছেন।
বিক্ষোভকারীরা রাজধানী খার্তুমের রাস্তায় নেমে এসেছে এবং গুলি বর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।
দুই বছর আগে দীর্ঘদিনের শাসক ওমর আল-বশিরকে উৎখাত করা হয়। এরপর একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। তখন থেকেই মূলত সামরিক ও বেসামরিক নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ চলতে থাকে।
দেশটিতে গভীর অর্থনৈতিক সংকটে চলছে। তবে আন্তর্জাতিক সমর্থন ছিল তাদের। কিন্তু সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করলে দেশটি ব্যাপকভাবে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
সোমবার উত্তর আফ্রিকার দেশটির রাজধানী থেকে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে যে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড জ্বালিয়ে সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরের নিকটবর্তী এলাকায় প্রবেশ করছে।
হাইথাম মোহামেদ নামিহাদ এক বিক্ষোভকারী এজেন্সি ফ্রান্স-প্রেসকে (এএফপি) বলেছেন, সুদানে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য আমরা আমাদের জীবন দিতে প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদোক তার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং অন্যান্য বেসামরিক নেতাদের সঙ্গে গৃহবন্দী হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ফেসবুকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের ‘অজ্ঞাত স্থানে’ রাখা হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়েছে যে হামদোককে একটি অভ্যুত্থানের সমর্থনে চাপ দেওয়া হচ্ছে কিন্তু তিনি তা করতে অস্বীকার করছেন এবং তিনি জনগণকে "বিপ্লব রক্ষার" জন্য শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
জেনারেল বুরহান সার্বভৌম কাউন্সিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা সামরিক ও বেসামরিক নেতাদের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি ব্যবস্থার অংশ।
টেলিভিশনে এক ভাষণে তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং সহিংসতার প্ররোচনা তাকে জাতির নিরাপত্তা রক্ষায় এবং "বিপ্লবের পথ সংশোধন" করতে বাধ্য করেছে।
তিনি বলেন, সুদান এখনো "আন্তর্জাতিক চুক্তি" এবং বেসামরিক শাসনে রূপান্তরের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে নির্বাচনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তবে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ইতিমধ্যে খার্তুমে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানাতে রাস্তায় নেমে এসেছে।
বিক্ষোভকারী সাওসান বশির এএফপিকে বলেছেন, বেসামরিক সরকার ফিরে না আসা পর্যন্ত এবং পরিবর্তন ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা রাস্তা ছাড়ব না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন যে ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে এবং শহরজুড়ে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। খার্তুম বিমানবন্দর বন্ধ রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ইইউ এবং আরব লীগও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
নিউজ ডেস্ক