ইউক্রেন সংকট নিয়ে মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন।
রোববার (০৫ ডিসেম্বর) হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাকি বলেন, ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনাবাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে মার্কিন উদ্বেগ তুলে ধরবেন। এছাড়াও ইউক্রেন রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করবেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও পুতিন তাদের সর্বশেষ মুখোমুখি বৈঠকটি করেছিলেন চলতি বছরের জুন মাসে, জেনেভাতে। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, দুই প্রেসিডেন্ট সর্বশেষ টেলিফোনে কথা বলেছেন ৯ জুলাই।
রাশিয়া ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা চালাতে যাচ্ছে বলে আমেরিকার হাতে প্রমাণ আছে—মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেনের এমন বক্তব্যের পরই এই বৈঠকের খবর জানা গেল। তবে রাশিয়া এমন কোনো ইচ্ছা পোষণের কথা অস্বীকার করেছে। বরং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলার অভিযোগ তুলেছে দেশটি।
ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়া সাঁজোয়া যান ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সরঞ্জামসহ ৯৪ হাজার সৈন্য সমাবেশ করেছে তাদের সীমান্তে। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রাইমিয়া দখল করে নেওয়ার পর দেশটির সীমান্তে এটাই রাশিয়ার সর্ববৃহৎ সৈন্য সমাবেশের ঘটনা।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেযনিকভ বলেন, জানুয়ারির শেষ দিকে হয়তো একটি আক্রমণের পরিকল্পনা করছে মস্কো। রাশিয়ার এই সৈন্য সমাবেশ নিয়ে এরমধ্যে রুশ-মার্কিন সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন সতর্ক করে বলেন, পুতিন যা করবেন বলে মানুষ আশঙ্কা করছেন, তা খুব কঠিন করে তুলবেন তিনি।
জানা গেছে, রাশিয়া যদি আগ্রাসী আক্রমণে যায় তাহলে দেশটির ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ করার ব্যাপারে আলোচনা সেরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা। ইউক্রেন নেটো সদস্য না হলেও এর সদস্যদের সঙ্গে দেশটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। দেশটি পশ্চিমা যুদ্ধ সরঞ্জামও পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মার্কিন জ্যাভলিন অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ক্ষেপণাস্ত্র।
রুশ কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, সীমান্তে সেনাবাহিনীকে জড়ো করা হয়েছে সামরিক মহড়ার জন্য। দেশটির অভিযোগ, নেটো ক্রাইমিয়ার কাছে কৃষ্ণ সাগরে মহড়া চালিয়ে উসকানিমূলক আচরণ করেছে। একইসঙ্গে ইউক্রেন তাদের সীমান্তে সোয়া লক্ষ্য সৈন্য সমাবেশ করেছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।
প্রসঙ্গত, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রাইমিয়া উপত্যকা দখল করে নেয়। এর পরপরই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের একটি দলকে সমর্থন দিতে শুরু করে রুশ কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনের একজন ক্ষমতাধর বন্ধুর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন এবং দেশটিতে তিনটি রুশপন্থী টিভি স্টেশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২১
এনএসআর