ইউরোপের দেশ ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে ইউক্রেনে আক্রমণ চালাতে রাশিয়া সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
ইউক্রেনে রাশিয়া আক্রমণ করলে অন্তত ৫০ হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হতে পারে। এই আগ্রাসনের ফলে ইউপোরে ঢল নামবে শরণার্থীদের।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেনে একটি পূর্ণমাত্রার অভিযান চালাতে যে ধরনের সামরিক সক্ষমতা দরকার, রাশিয়া তার প্রায় ৭০ শতাংশ এখন জড়ো করে ফেলেছে বলে দাবি করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মাটিতে বরফ জমে তা শক্ত হয়ে যাবে। এর ফলে মস্কোর পক্ষে ভারী সামরিক যান নিয়ে আসা সহজ হবে।
এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারলেও মার্কিন গণমাধ্যমে ওই কর্মকর্তারা বলেন, তারা গোয়েন্দা সূত্রে এসব তথ্য পেয়েছেন। এই তথ্যগুলো সংবেদনশীল হওয়ায় তারা সবকিছু জানাতে চাচ্ছেন না। কূটনৈতিকভাবে এখনো এই সংকট সমাধান করা সম্ভব বলেও তারা মনে করেন।
দুজন মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হলে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের শেষের দিকে সামরিক সরঞ্জাম ইউক্রেন সীমান্তে নিয়ে যাবে মস্কো। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণে ৫০ হাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
ওই কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, রাশিয়া আক্রমণ করলে কয়েক দিনের মধ্যে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পতন হতে পারে। এতে করে দেশটির লাখ লাখ বাসিন্দা পাশের দেশগুলোতে পালিয়ে যাবে। এর ফলে ইউরোপে শরণার্থী সংকট প্রকট হবে।
এমন পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলে সামরিক জোট ন্যাটোর বাহিনীকে শক্তিশালী করতে অতিরিক্ত মার্কিন সৈন্য পোল্যান্ডে পৌঁছেছে। প্রথম দল শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বে রেজেসজোতে অবতরণ করে।
কয়েক দিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন ঘোষণা করেছিল যে, তারা পূর্ব ইউরোপে প্রায় ৩ হাজার অতিরিক্ত সেনা পাঠাবে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রথম থেকে অভিযোগ করে আসছে, ইউক্রেন দখলে নিতে দেশটির সীমান্তের কাছে অন্তত ১ লাখ সৈন্য মোতায়েন করেছে রাশিয়া। কিন্তু প্রথম থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মস্কো।
রাশিয়ান সৈন্যরা সামরিক মহড়া দিতেই ওই অঞ্চলে রয়েছে বলে জানিয়েছে মস্কো। একই সঙ্গে দেশটি বলছে, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়া উচিত নয়।
তবে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ক্রেমলিন একটি আক্রমণ শুরু করার সব ধরনের পরিকল্পনা করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২২
জেএইচটি