ঢাকা: সম্ভাব্য রুশ সামরিক আগ্রাসন নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তীব্র শীত উপেক্ষা করে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী জাতীয় পতাকা হাতে রাজপথে নেমে আসেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশবাসীর উদ্দেশে রুশ আগ্রাসনের হুমকির মুখে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সকালে রাজপথে নেমে সম্ভাব্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের প্রমাণ দেন ইউক্রেনবাসী।
এ সময় কিয়েভের রাজপথে মারিয়া শেচারবেঙ্কো নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি শান্তি চাই। আমি ইউক্রেনকে ভালোবাসি। এ পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে লাভ নেই। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ’
যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন নাতালিয়া সাভোস্তিকোভা। ৬৭ বছর বয়সী এ চিকিৎসক আল জাজিরাকে বলেন, ‘এখন ভীষণ রকমের অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সময় পার করছে ইউক্রেনবাসী। তবে আমরা কী করবো সেটা পুতিন বলে দিতে পারেন না। ’
২০১৪ সালের মার্চে রুশ সেনারা ইউক্রেনের অংশ ক্রিমিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এরপর থেকে সেখানে মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাদের লড়াই চলছে। এ লড়াইয়ে অন্তত ১৪ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এখন পুরো ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযানের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। যেকোনো সময় ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে পারে দেশটি। এজন্য পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পূর্ব ইউরোপে সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো।
তবে রাশিয়া বরাবরই পশ্চিমাদের তোলা এ অভিযোগ অস্বীকার করছে। দেশটি বলছে, ইউক্রেনে হামলা চালানোর কোনো পরিকল্পনা মস্কোর নেই। মহড়ার অংশ হিসেবে সেনা সমাবেশ ঘটানো হয়েছে। তবে মস্কোর এমন দাবি মানতে নারাজ পশ্চিমারা।
গত শুক্রবার ওয়াশিংটন জানায়, যেকোনো সময় বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানোর জন্য যথেষ্ট সেনা ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন করেছে রাশিয়া। সম্ভাব্য রুশ সামরিক অভিযানের আশঙ্কা থেকে নিজেদের নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন ছাড়তে বলা হয়েছে।
ইউক্রেনে সম্ভাব্য রুশ সামরিক আগ্রাসন নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই শনিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় পুতিনকে সতর্ক করে বাইডেন বলেন, ‘সামরিক আগ্রাসনের ফলে ইউক্রেনে বড় ধরনের মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে। এর ফলে রাশিয়ার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আর হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্ররা দ্রুত এর কড়া জবাব দেবে। রাশিয়াকে এজন্য চড়া মূল্য দিতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২
এনটি