ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

পুরো ইউক্রেনে চলছে যুদ্ধ, শহর ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
পুরো ইউক্রেনে চলছে যুদ্ধ, শহর ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ

পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনী এখন উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিক দিয়ে দেশটিতে ঢুকছে। তারা এখন কিয়েভের একেবারে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে দ্বিতীয় দিনের মতো হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। গত কয়েক দশকের মধ্যে এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ বলে মনে করা হচ্ছে। এখন ইউক্রেন জুড়ে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভে বড় যুদ্ধ হচ্ছে। এছাড়া উত্তর ইউক্রেনে, দক্ষিণের ওডেসায় লড়াই চলছে।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে কিয়েভে একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। কিয়েভে রাশিয়ার একটি বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। অপরদিকে ইউক্রেনের বড় বড় অনেক শহর এবং সেনা ঘাঁটিতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে।  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, নাশকতাকারীরা কিয়েভে প্রবেশ করেছে। রাশিয়ার হামলায় সামরিক-বেসামরিক মিলিয়ে ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন।  

যুদ্ধ করার উপযুক্ত সবাইকে দেশের জন্য অস্ত্র হাতে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেনের সরকার। একইসঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য একটি ভিডিও বার্তায় রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ভলোদামির জেলেনস্কি।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে টেলিফোন করে হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।  

তবে হামলার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়াকে রক্ষায় আর কোন বিকল্প ছিল না।

যদিও যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভের সময় শত শত মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের তেজস্ক্রিয় চেরনোবিল পারমাণবিক এলাকা রুশ সেনাদের হাতে চলে গেছে। সেখানে অনেককে জিম্মি করা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে।

এদিকে, যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় নাগরিক। অনেকে পোল্যান্ড ও রোমানিয়ার সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে বেশিরভাগ ইউক্রেনীয় নিজের এলাকায় থেকেই বাঙ্কারে, ভূগর্ভস্থ স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান নতুন করে রাশিয়ার ব্যাংক, কোম্পানি ও ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।

শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রকে একাই রক্ষা করছি। গতকালের মতো বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী দূর থেকে দেখছে’।  

এই যুদ্ধে পশ্চিমাদের উদ্যোগ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেন, ‘গতকালের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে রাশিয়া কি নিশ্চিত ছিল? আমাদের আকাশে শুনতে পাই এবং আমাদের পৃথিবীতে দেখতে পাই যে, সেই উদ্যোগ যথেষ্ট ছিল না’।  

রাশিয়ার নৃশংস হামলা বন্ধ করতে এবং ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আরেকটি আবেদন করেছেন জেলেনস্কি।  

এর আগে মস্কোর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সেনা অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন। এর কয়েক মিনিট পরই ইউক্রেনে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে সেখানে ‘শান্তি ফেরাতে’ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন। পুতিনের ঘোষণার পর সেখানে গোলাবর্ষণ আরও তীব্র হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।