ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পঞ্চম দিনে রাজধানী কিয়েভের কেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে কিভেয়ে সপ্তাহব্যাপী চলা কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ইউক্রেনে চলমান অভিযান বিজয়ের মাধ্যমে আগামী ২ মার্চের মধ্যে শেষ করতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়ার সাবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই ফেদোরভ আল-জাজিরায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।
আন্দ্রেই ফেদোরভ বলেন, ইউক্রেন অভিযানে আগামী কয়েক দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভ্লাদিমির পুতিনের প্রাথমিক নির্দেশ ছিল ২ মার্চের মধ্যে বিজয়ের মাধ্যমে সামরিক অভিযান শেষ করার।
ফেদোরভ বলেন, মস্কো তার প্রতিবেশীর ওপর পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার কারণে তিনি দুই দেশের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে আশাবাদী। পূর্বশর্ত ছাড়াই আলোচনা হওয়া উচিত। আমি কিয়েভে আমার বন্ধুদের অবস্থান এবং ইউক্রেনের নেতৃত্বের কথা জানি। তারা পূর্ব শর্ত ছাড়া শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
শান্তি আলোচনার স্থান প্রস্তুত
ইউক্রেন ও রাশিয়া বেলারুশ সীমান্তের কাছে একটি জায়গায় আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সেটা আগেই জানিয়েছেন।
বেলারুশের স্বৈরশাসক আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো রাশিয়ার সঙ্গে হামলায় যোগ দিতে সৈন্য পাঠাতে প্রস্তুত, এমন খবর জানা সত্ত্বেও দেশটির সীমান্তের কাছে একটি স্থানে কূটনীতিকদের পাঠাতে সম্মত হয়েছে ইউক্রেন।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের পতাকাসহ একটি দীর্ঘ টেবিলের ছবি প্রকাশ করে বেলারুশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে জানিয়েছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনার স্থান প্রস্তুত করা হয়েছে, প্রতিনিধিদলের আগমন প্রত্যাশিত।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনাতোলি গ্লাজ বলেছেন, প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আলোচনার স্থানে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে।
ইউক্রেন বৈঠকে কোনো ছাড় না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বৈঠকে বসলেও এখান থেকে কোনো ফলাফল আসবে না বলে মনে করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
যুদ্ধের পঞ্চম দিনেও মুহুর্মুহু বিস্ফোরণ
ইউক্রেনের রাজধানীতে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেওয়া হলেও সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনেও বারবার বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে সেগুলোর বেশিরভাগই কিয়েভের কেন্দ্র থেকে বাইরে বলে মনে হচ্ছে। শহরের কেন্দ্রে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভাব্য হামলা শেষমেশ বাস্তবায়িত হয়নি এবং রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ এখনো ইউক্রেনের হাতেই রয়েছে।
কিয়েভের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, যুদ্ধ শেষ হয়নি, কারণ শহরের প্রায় প্রতিটি এলাকার রাস্তায় লড়াই চলছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, কিয়েভের বাসিন্দারা সকালে উঠে এমন একটি শহরের দৃশ্য দেখবে যা তারা সচরাচর দেখে অভ্যস্ত নয়।
কিয়েভের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘আপনি যখন সকাল ৮টার পর শহর ত্যাগ করবেন, তখন কিয়েভের রাস্তায় থাকা দুর্গ, ট্যাংক-প্রতিরোধী হেজহগ এবং অন্য প্রতিরোধ চোখে পড়তে পারে’।
এই কারফিউ আবার রাত ১০টায় শুরু হবে, যা চলবে মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত। তবে বাসিন্দাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, একেবারে প্রয়োজন না হলে দিনের বেলায় তাদের বাড়িঘর এবং আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ না করতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২
জেএইচটি