ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর খেরসনে তীব্র রুশ হামলার মুখে বাঙ্কার এবং বেজমেন্টে আশ্রয় নেওয়া আফ্রিকার শিক্ষার্থীরা সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছেন।
ক্যামেরুন থেকে আসা ২২ বছরের ক্রিস্টোফার তার অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বেজমেন্ট থেকে টেলিফোনে বিবিসিকে বলেন, ‘যখন বোমা শুরু হয়, তখন আমরা এখানে এসে আশ্রয় নেই।
ওই শিক্ষার্থী বলেন, তাদের বিদ্যুৎ নেই, পানি ফুরিয়ে আসছে।
গিনি থেকে পড়তে আসা মামাদি ডোমবুয়া শহরের অন্য প্রান্তে একইরকম একটি শেল্টারে আটকে রয়েছেন গ্যাবন, সেনেগাল ও ক্যামেরুন থেকে আসা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে।
মামাদি বলেন, ‘আমাদের পানি নেই, আলো নেই। আমরা সরকারের সাহায্য চাইছি। আমরা খেরসনে আটকা পড়েছি। বেরুনোর কোনো উপায় নেই’।
রুশ আগ্রাসনের পর ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে যে লাখ রাখ মানুষ গত এক সপ্তাহে পালিয়ে গেছেন তাদের মধ্যে প্রায় ৭ হাজার আফ্রিকান।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ দখলে নিয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। বুধবার (২ মার্চ) ভোর ৬টার দিকে পুরো শহর দখলে নেয় তারা। তবে যুদ্ধ এখনো চলছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
জানা গেছে, খারকিভ শহরের পতনের পর আকাশ থেকে প্যারাশ্যুট দিয়ে নেমে আসেন রুশ সেনারা। এ খবর নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। তারা বলছেন, বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠার পরপরই আকাশ থেকে হামলা চালানো শুরু হয়।
আগ্রাসন ঠেকাতে সাত দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে যেমন অস্ত্রের যুদ্ধ চলছে, তেমনি বিশ্বনেতাদের বাগযুদ্ধ থেমে নেই। এই বারুদ আর বাগযুদ্ধের মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় শান্তি আলোচনায় বসছেন রুশ ও ইউক্রেনিয়ান কর্মকর্তারা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় এই শান্তি আলোচনা শুরু হচ্ছে বলে খবর দিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা তাস। এ দফার বৈঠক কোথায় হবে, তা বলা হয়নি।
এদিকে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মার্কিন ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা ‘নজিরবিহীনভাবে’ একজোট হয়েছেন। তারা রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় স্টেট অফ দি ইউনিয়নে জো বাইডেনের বক্তব্যের সময় আইনপ্রণেতাদের ওই ‘বিরল ঐক্য’ দেখা যায়।
এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আগামীতে কী ঘটতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কোনো ধারণাই নেই। এই পরিস্থিতির জন্য পুতিন একাই দায়ী।
মার্কিন আকাশসীমায় রাশিয়ার সব ধরনের ফ্লাইট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথাও জানান বাইডেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকে রুশ বাহিনী দেশটির একের পর এক শহরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। বুধবার সপ্তম দিনের মতো যুদ্ধ চলছে।
যুদ্ধে ইউক্রেনে এখন পর্যন্ত ১৩৬ জন নিহত হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ। যুদ্ধের ষষ্ঠ দিনে ইউক্রেন থেকে অন্তত ৬ লাখ ৬০ হাজার মানুষ পাশের দেশগুলোতে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২২
জেএইচটি