ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক কেন্দ্র রয়েছে ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়ায়। সেই কেন্দ্রে রুশ হামলার পর আগুন লেগে যায়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, টুইটারে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে এখন আগুন জ্বলছে’। ওই ঘটনায় তিনি রুশ সেনাদের দায়ী করেছেন।
এই ঘটনার পর ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণের কথা স্মরণ করিয়ে দেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ১৩০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এই চেরনোবিল।
চেরনোবিলে এক সময় চারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল। সেই কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটে ১৯৮৬ সালের এপ্রিলে। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ জন মারা যায়। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে তিজস্ক্রিয়তার প্রভাবে মৃত্যু হয় আরও কয়েক’শ মানুষের। এই অঞ্চলের প্রায় ৩০ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে এখনো মানুষের বসবাস নিষিদ্ধ।
সেই ভয়াবহতার কথা স্মরণ করে পশ্চিমাদের উদ্দেশে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইউরোপীয়রা, দয়া করে জেগে উঠুন। আপনার রাজনীতিবিদদের বলুন যে, রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রে গুলি করছে’।
জেলেনস্কি বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউ, জার্মানি ও পোল্যান্ডের নেতাসহ আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি সাধারণ নাগরিক ও রাজনীতিবিদদের সতর্ক থাকতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া থেকে ছড়ানো গুজবে সতর্ক করা হয়েছিল যে, তারা বিশ্বকে পারমাণবিক ছাইয়ে ঢেকে দেবে। এখন এটি কেবল একটি সতর্কতা নয়, এটি বাস্তব’।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে শুক্রবার (৪ মার্চ) নবম দিনের মতো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। এই যুদ্ধে এরই মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ দেশটি ছেড়ে পাশের দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় অনেকেই আটকে পড়েছেন। তারা খাদ্য-চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছে।
তাই যুদ্ধবিরতির পথ খুঁজতে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় ‘শান্তি আলোচনায়’ বসে ইউক্রেন ও রুশ প্রতিনিধিদল। ওই আলোচনায় কিয়েভ আশানুরূপ ফল পায়নি। যুদ্ধবিরতির বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে ইউক্রেনে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য বা তাদের কাছে সহায়তা পাঠাতে ‘মানবিক করিডর’ দিতে সম্মত হয়েছে রাশিয়ায়। দুই পক্ষের মধ্যে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা হয় বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
মানবিক করিডরের বিষয়ে সমঝোতা হওয়ার ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকা বেসামরিক লোকদের দ্রুত সরিয়ে নিতে পারবে কিয়েভ। একই সঙ্গে তাদের কাছে খাদ্য-চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করতে পারবে। রুশ সেনারা ইউক্রেনের কয়েকটি অঞ্চল ঘিরে ফেলার কারণে কয়েক দিন ধরেই সেই সংকট প্রকট হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২২
জেএইচটি
Терміново! pic.twitter.com/MuXfniddVT
— Володимир Зеленський (@ZelenskyyUa) March 4, 2022