তৃতীয় বিশ্বের অশ্বেতাঙ্গ শরণার্থীদের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে ভয়ঙ্কর আচরণ করেছে ইউরোপ। কিন্তু ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের প্রতি তাদের `বিশেষ আয়োজন' দেখে চোখ কপালে উঠছে অনেকের।
বিশেষ করে ফ্রান্সের অনেকে দাবি করেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো যেন সব শরণার্থীর দায়িত্ব নেয়। বিশেষ করে শরণার্থী সংকটের জন্য, যা পশ্চিমা সহিংসতায় উসকে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি ঐতিহাসিক ও বিষ্ময়কর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে শরণার্থীরা নিজের ব্লকে বাস করার পাশাপাশি অবাধ ভ্রমণের অধিকার পাবে। থাকবে কাজ করার অধিকারও। এমনকি আবাসন এবং চিকিৎসা সেবা পাওয়ার অধিকারও রয়েছে তাদের, তবে তা যেন শুধুই ইউক্রেনীয়দের জন্য প্রযোজ্য। ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক, মালিসহ মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র বা অন্য কোনো দেশের শরণার্থীরা এই অধিকার পাচ্ছেন না।
অন্যদিকে এটাই যেন শরণার্থী সংকটকে আরো উসকে দিয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে কেউ ইউক্রেনীয়দের মানবাধিকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছে না। তবে ফরাসিদের অনেকে ভাবছেন, কেন তৃতীয় বিশ্বের কৃষ্ণাঙ্গ, বাদামি এবং মুসলিম শরণার্থীদের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিপরীত আচরণ করা হচ্ছে?
ফ্রান্সের ক্যালাইসে কয়েক ডজন মানুষের ডুবে যাওয়া, পোল্যান্ডে ঠাণ্ডায় জমে মৃত্যু, ইতালিতে ক্যাম্পে ভর্তি, ইস্পাত বেড়া নির্মাণ, মৌলিক স্যানিটেশন অস্বীকার, নির্বাচনের পর শরণার্থী নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করাসহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে চলা ইউরোপীয় শরণার্থী সংকট নতুন মোড় নিয়েছে। তবে এখনো ইউরোপীয় নীতির বেশিরভাগই অপরিবর্তিত রয়েছে।
আবার অশ্বেতাঙ্গ শরণার্থীদের প্রতি তাদের ‘উন্মুক্ত বৈষম্য’কে গভীর বর্ণবাদ ও জেনোফোবিয়া হিসেবেই ভাবছেন অনেকে। ফরাসিদের মতে, এর মাধ্যমে ইউরোপের ‘ভণ্ডামি’ প্রকাশিত হচ্ছে এবং তা শেষ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে কলঙ্ক রেখে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২২
এনএসআর