বিশ্বের মানুষ কখনও দেখেছেন জুডোয় পারদর্শী পুতিনকে। আবার কখনও আইস হকির উৎসাহী।
তবে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর নতুন করে গতি পেয়েছে পুতিনের স্বাস্থ্যগত বিষয়। এর কারণ হচ্ছে পুতিনের সাম্প্রতিক ছবিতে দেখা গেছে, তার মুখ ও ঘাড় বেশ ফোলা। চেহারা ফ্যাকাশে। এতেই জল্পনার পালে হাওয়া লেগেছে। সূত্র: টেলিগ্রাফ, আইরিশ মিরর
যদিও মস্কো পুতিনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো বিবৃতি এখনও পর্যন্ত জারি করেনি।
এ নিয়ে পাঁচটি কারণও জানা যাচ্ছে-
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে পুতিনের মুখ এবং ঘাড়ের অংশ বেশ ফোলা দেখাচ্ছে। যেন কোনো চিকিৎসার জন্য তিনি স্টেরয়েড নিচ্ছেন। তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেই ফুলে গিয়েছে তার মুখ ও ঘাড়ের অংশ।
হোয়াইট হাউসের এক শীর্ষ পদাধিকারী ফিয়োনা হিল আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যমে বলেন, পুতিনের মুখ ফুলে গিয়েছে। তাকে তেমন একটা সুস্থ দেখাচ্ছে না। আমরা জানি যে তার পিঠে একটা সমস্যা রয়েছে। তবে তার থেকেও গুরুতর কিছু সমস্যা হয়েছে কি? তাহলে হয়তো তিনি বেশি মাত্রায় স্টেরয়েড নিচ্ছেন অথবা অন্য কিছুও হতে পারে।
ব্রিটেনের সাবেক পররাষ্ট্র সেক্রেটারি ডেভিড ওয়েনের মতে, যারা বলছেন যে পুতিন প্লাস্টিক সার্জারি বা বোটক্স করিয়েছেন, তাদের কথা বিশ্বাস করি না। পুতিনের মুখটা দেখুন! কীভাবে তা বদলে গিয়েছে। এখন তার মুখ একেবারে গোলাকৃতি!
রাশিয়ার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ তথা ইতিহাসবিদ ভ্যালেরি সলোভেইয়ের দাবি ছিল, পুতিনের শারীরিক উপসর্গে পার্কিনসন্স এবং ক্যানসারের লক্ষণ দু’ই রয়েছে। তার আরও দাবি, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জরুরি অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছে পুতিনকে।
সলোভেইয়র আরও মন্তব্য করেন, পুতিনের দু’টি সমস্যা রয়েছে। একটি সাইকো-নিউরোলজিক্যাল এবং অন্যটি ক্যানসারের সমস্যা। শারীরিক সমস্যার কারণেই ২০২১ সালে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার কথাও চিন্তা-ভাবনা করেছিলেন পুতিন।
তিনি আরও বলেন, আমি চিকিৎসক নই এবং এসব সমস্যার কথা প্রকাশ্যে আনার নীতিগত অধিকারও আমার নেই।
রাষ্ট্রনেতা হোক বা নিজের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের সহযোগী, সম্প্রতি সব পক্ষের সঙ্গেই বৈঠকে পুতিনকে দেখা গিয়েছে অস্বাভাবিক লম্বা টেবলের অপর প্রান্তে বসে রয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে পুতিনের সঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরনের বৈঠক হয়েছিল একটি ১৩ ফুট লম্বা টেবিলে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভকেও আর একটি অত্যধিক লম্বা টেবলের এক প্রান্তে বসতে হয়েছিল।
বৈঠকে কি শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখছেন পুতিন? সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি, পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে বাধ্যতামূলকভাবে দু’সপ্তাহের নিভৃতবাসে থাকতে হচ্ছে তার কর্মী এবং রাজনীতিকদের। এমনকি, পুতিনের সাক্ষাৎপ্রার্থীদের সবাইকেই নাকি জীবাণুনাশক টানেলের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। এ কারণে জল্পনা ছড়িয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে আছেন পুতিন। কারণ তার নিশ্চয়ই সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।
আমেরিকার সেনেটর মার্কো রুবিওর মন্তব্যেও পুতিনের স্বাস্থ্য নিয়ে ধোঁয়াশা বেড়েছে। পুতিন সম্পর্কিত তথ্য হাতে পেয়েছেন বলে দাবি সেনেটের ইন্টেলিজেন্স কমিটির সদস্য মার্কোর।
মার্কো সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এখনকার মতো এটুকু বলতে পারি যে, এটা বেশ বোঝা যাচ্ছে পুতিনের অনেক কিছুই ঠিকঠাক নেই। মনে হচ্ছে পুতিনের কিছু নিউরো-সাইকোলজিক্যাল শারীরিক সমস্যা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরই মধ্যে সোমবার ১৯তম দিনে গড়িয়েছে এই অভিযান। ১৮ দিনে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি নগরী দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২২
জেডএ