তীব্র অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে জ্বালানি ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ পুনরুদ্ধারে আগামী ছয় মাসের মধ্যে শ্রীলঙ্কার প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সাহায্য প্রয়োজন। শনিবার (০৯ এপ্রিল) দেশটির অর্থমন্ত্রী আলী সাবরি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন।
তবে এই প্রয়োজন মেটানো একটি কঠিন কাজ বলেও স্বীকার করেছেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আলোচনার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বসব। আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি জানান, সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এবং বিশ্বব্যাংক থেকেও সহায়তা চাইবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং মধ্যপ্রাচ্যকেও পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সহায়তা চাওয়া হবে। এছাড়া জ্বালানির জন্য ভারতের কাছ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চাইবে শ্রীলঙ্কা, যা দিয়ে প্রায় পাঁচ সপ্তাহ চলা যাবে।
শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রী হিসেবে এ সপ্তাহেই দায়িত্ব নেন আলী সাবরি। দেশটি আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড পুনর্গঠন করতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই মাসে বন্ডের এক বিলিয়ন ঋণ শোধের ওপর একটি স্থগিতাদেশ চাইবে শ্রীলঙ্কা। এ জন্য বন্ডহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় সরকার।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার আলি সাবরি পার্লামেন্টে বলেন, তীব্র অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে ঋণ পুনর্গঠনের দিকে নজর দিতে হবে। এরপর বিশেষজ্ঞদের ঋণ পুনর্গঠন পরিকল্পনা চান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
মার্চ মাস শেষে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে মাত্র ১.৯৩ বিলিয়ন ডলারে। চলতি বছর দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ ৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলে ধারণা করছেন জেপি মরগান বিশ্লেষকরা। এতে করে দেশটিকে তিন বিলিয়ন ডলারের তারল্য ঘাটতির মুখোমুখি হতে হবে।
প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশটিতে এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও তেলসহ নিত্যপণ্যের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন সাধারণ মানুষ। তারা ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করে চলেছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের ওপর।
বাংলাদেশ সময় ১৯৫৬ ঘণ্টা, ০৯ এপ্রিল, ২০২২
এনএসআর