খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে হঠাৎ করেই গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। দেশটি এমন সময়ে এ সিদ্ধান্ত নিল, ইউক্রেনে রুশ অভিযান এবং প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে গমের উৎপাদন কমে অভ্যন্তরীণ দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
এদিকে ভারতের এমন সিদ্ধান্তে শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন জি-৭ নিন্দা জানিয়েছে। শনিবার (১৪ মে) দেশগুলির কৃষিমন্ত্রীরা এক বিবৃতিতে ভারতের এমন সিদ্ধান্তে নিন্দা জানান। খবর আল-জাজিরা।
জি-৭ জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলো হলো- জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ক্যানাডা, ফ্রান্স, ইটালি ও জাপান।
স্টুটগার্টে এক সংবাদ সম্মেলনে জার্মানির কৃষিমন্ত্রী চেম ওজদেমির বলেন, ‘যদি সবাই রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ বা বাজার বন্ধ করতে শুরু করে, তাহলে তা সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেবে। ’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা ভারতকে জি-২০- এর সদস্য হিসেবে সংকট মোকাবিলার দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানাই।
যদিও ভারত বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গম রপ্তানিকারক দেশ নয়, তবুও ভারতের গম রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী এর দাম আরও বাড়তে পারে, যা এশিয়া এবং আফ্রিকার দরিদ্র ভোক্তাদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলতে পারে।
এদিকে শনিবার নয়াদিল্লিতে ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, এরই মধ্যে খোলা এলসির (লেটার অব ক্রেডিট) বিপরীতে এবং যেসব দেশ ‘তাদের খাদ্য নিরাপত্তার চাহিদা মেটাতে’ সরবরাহের অনুরোধ করবে সেসব দেশের জন্য গম রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘস্থায়ী হবে না এবং এটি সংশোধন করা যেতে পারে।
ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর শুক্রবার (১৩ মে) গম রপ্তানি বন্ধের এক সরকারি গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, গমের বৈশ্বিক মূল্য বৃদ্ধি ভারত ও তার প্রতিবেশী এবং দুর্বল দেশগুলোর খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এ কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে দেশটির বাণিজ্য সচিব বিভিআর সুব্রাহ্মণ্যম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চাই না যে গমের ব্যবসা অনিয়ন্ত্রিতভাবে হোক বা মজুদ হোক। ’
অবশ্য চলতি বছর ভারতের গমের উৎপাদনে খুব একটা হেরফের হয়নি। এ অবস্থায় দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, অনিয়ন্ত্রিত রপ্তানির কারণেই এই শস্যের স্থানীয় দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, ১৫ মে, ২০২২
এমএমজেড