খাদের কিনারে পড়ে থাকা অর্থনীতিকে চাঙা করতে মরিয়া শ্রীলঙ্কা। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে নতুন প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা নিয়োগের পর থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের পরিস্থিতি পরিবর্তনের।
শুক্রবার (২৭ মে) কলম্বো পেজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। খবরে বলা হয়, জাতীয় গ্রিডে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উত্সগুলোয় অবদান বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞদের আহ্বান জানিয়েছেন গোতাবায়া।
সরকার নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে মোট বিদ্যুতের চাহিদার ৭০ শতাংশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। শ্রীলঙ্কা এখন সৌর-বিদ্যুৎ ব্যবহার করে প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
কিন্তু জনগণের অভিযোগ, সিলন ইলেক্ট্রিসিটি বোর্ডের (সিইবি) প্রকৌশলীদের বিরোধিতার কারণে সৌর শক্তির যথেষ্ট ব্যবহার করা হচ্ছে না।
প্রেসিডেন্টের বরাত দিয়ে তার মিডিয়া উইং বলেছে, বর্তমান বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে বাস্তবিক অবদানের কথা বলেছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস ব্যবহারে যেসব সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন গোতাবায়া। কলম্বোয় প্রেসিডেন্ট ভবনে বৃহস্পতিবার (২৬) মন্ত্রিপরিষদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে বিশ্বের অনেক দেশে সৌর-বিদ্যুৎ উৎপাদন একটি প্রধান কৌশল হয়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, এ প্রবণতা অনুসরণ করে বর্তমান বিদ্যুৎ সংকটের দ্রুত সমাধান হিসেবে রুফটপ সোলার প্যানেল ব্যবহার করা উচিত।
বিদ্যুৎ বোর্ডের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (ট্রান্সমিশন) পি.ডব্লিউ. হেনদাহেওয়া জানিয়েছেন, দেশব্যাপী মূল বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিদ্যমান ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট নতুন শক্তি যোগ করা যেতে পারে।
পাবলিক ইউটিলিটি কমিশনের মহাপরিচালক দামিথা কুমারসিংহে বলেছেন, পেট্রোলিয়াম জ্বালানির মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুতের এক ইউনিট ১০০ টাকা ও কয়লা দিয়ে উৎপাদিত বিদ্যুতের একটি ইউনিট ৫০ টাকা বেড়েছে। এর পরিবর্তে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবহার করলে বছরে ৩০ হাজার কোটি শ্রীলঙ্কান রুপির বেশি সাশ্রয় হতে পারে।
দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানি-মন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকরা জানিয়েছেন, তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে মাসে ১০ কোটি রুপির বেশি খরচ হয়। সে অনুযায়ী বর্তমান দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা কঠিন কাজ।
সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্কুল ও হাসপাতালসহ সরকারি ভবনের ছাদ ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ জমি বাঁচানো যেতে পারে বলে জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. অনিল জাসিংঘে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্টর সচিব গামিনী সেনারথ, চিফ অব স্টাফ অনুরা দিসানায়েকে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২২
এমজে