রুশ সেনারা গত শনিবার (১ অক্টোবর) পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহর লিমানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এরপর তারা শহরটি ছেড়ে যাওয়ার সেখানকার রাস্তায় রুশ সেনাদের মরদেহ পড়ে থাকেতে দেখা যায়।
লিমান শহনটি উভয় পক্ষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রুশ সেনারা শহরটিকে লজিস্টিক এবং পরিবহন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতো। তীব্র যুদ্ধের পর শহরটিকে রুশ দখলমুক্ত করেছে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী। তাবে তারা তাৎক্ষণিক নিহত রুশ সেনাদের মরদেহ সংঘ্রহ করেনি। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) ইউক্রেনীয়দের রুশ সেনাদের মরদেহ সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।
রাশিয়া ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে নিজেদের সঙ্গে সংযুক্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই ইউক্রেনীয় বাহিনী দ্বারা ঘেরাও এড়াতে শনিবার লিমান থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়। শহরটির দখলমুক্তি ইউক্রেনকে রুশ দখলকৃত অঞ্চলগুলিতে অভিযানের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সুবিধা করে দিয়েছে।
ইউক্রেনের সেনারা লিমান রুশ দখলমুক্ত করারা শহরটির বাসিন্দারা বেসমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসেন। তারা রুশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের সময় এসব বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সেনারা ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর গত মে মাস থেকে শহরটিতে পানি, বিদ্যুৎ বা গ্যাস নেই।
সেখানে এক ইউক্রেনীয় সেনা বলেন, আমরা আমাদের ভূমির জন্য, আমাদের সন্তানদের জন্য লড়াই করি। যাতে আমাদের লোকেরা আরও ভালভাবে বাঁচতে পারে। কিন্তু এই সবকিছুর জন্যই অনেক মূল্য দিতে হয়।
ভ্যালেন্টিনা কুজমিচনা (৮৫) নামে একজন সাম্প্রতিক এক বিস্ফোরণের কথা স্মরণ করে বলেন, আমি হলের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলাম, প্রায় ৫ মিটার দূরে, এটি বোমা বিষ্ফোরিত হয়। সৃষ্টিকর্তা না করুন, এখনো আমি ভালভাবে শুনতে পাচ্ছি না।
এদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনী পূর্ব এবং দক্ষিণে কিছুটা সফলতা পওয়ায় রুশ বাহিনীর হাতে দখল হওয়া বাকি ভূমি পুনরুদ্ধারে তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, রাশিয়ান বাহিনী মঙ্গলবারও (৪ অক্টোবর) ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে আরও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
এদিন বেশ কয়েকটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে আঘাত হানে। এতে শহরটির বেশ কিছু অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। খারকিভের গভর্নর ওলেহ সিনিয়েহুবভ বলেছেন, রুশ হামলায় একজন নিহত হয়েছেন, এবং নয় বছরের এক কন্যা শিশুসহ অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে, দোনেৎস্ক অঞ্চলের লিমান শহরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারে পর, ইউক্রেনীয় বাহিনী আরও পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তারা ক্রেমিনার দিকে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশী লুহানস্ক অঞ্চলের সীমানা পর্যন্ত চলে যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২২
এমএমজেড