মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভে অন্তত ৩০৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ইরানবিষয়ক নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যানস রাইটসের (আইএইচআর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মাহসা আমিনি নামে এক তরুণী। গ্রেফতারের তিনদিন পর পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় যাওয়া এ তরুণীর প্রাণহানি ঘটে। তার মৃত্যুর পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইরানের সাধারণ মানুষ। ইরানজুড়ে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ-সংঘাত, যা এখনও চলমান আছে।
আইএইচআর বলেছে, দেশব্যাপী চলমান আন্দোলনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩০৪ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ২৪ নারী ও ৪১ শিশু রয়েছে।
নরওয়েভিত্তিক এ মানবাধিকার সংস্থার মতে, গত শুক্রবার সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশের খাস শহরে বিক্ষোভ করার সময় অন্তত ১৬ জনকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
সংস্থাটির দাবি, সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে শুধুমাত্র এ অঞ্চলে প্রাণ হারিয়েছেন ১১৮ জন।
ইরানের বেশিরভাগ মানুষ শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের হলেও সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশটি জাতিগত বালুচ সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। এ অঞ্চলে এত হতাহতের ঘটনায় স্থানীয় সশস্ত্র মিলিশিয়া বাহিনীকে দায়ী করেছে ইরানের সরকার। এর আগেও সেখানকার সশস্ত্র সুন্নি মিলিশিয়া বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ইরানের সেনাবাহিনী।
এদিকে বালুচ অধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন, সিস্তান-বালুচিস্তানের সাধারণ মানুষের সঙ্গে ধর্মীয় ও জাতিগত বৈষম্য করে আসছে ইরান সরকার। তাদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে এ অঞ্চলটিকে অবহেলা করে আসছে তারা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইরানের সবচেয়ে দরিদ্র ও অনুন্নত প্রদেশগুলোর একটি হলো সিস্তান-বালুচিস্তান।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২২
এইচএমএস/আরবি