ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চান নওহাটার মকবুল

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১৬
মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চান নওহাটার মকবুল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নওহাটা (পবা, রাজশাহী) থেকে ফিরে: ‘মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন এলাকার উন্নয়ন করার জন্য, তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য। যথাযথভাবে পৌর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার জন্য।

আমাকে তাই করতে হবে। দল নয়, মানুষই সকল ক্ষমতার উৎস। তাই মানুষের জন্য কাজ করতে চাই’।

শুক্রবার (০১ জানুয়ারি) দুপুরে একান্ত সাক্ষাতকারে বাংলানিউজের মুখোমুখি হলে মনের এমন ইচ্ছের কথাই জানান রাজশাহীর পবার নওহাটার নতুন পৌরপিতা মকবুল হোসেন। দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে এবার ১২ হাজার ৭৮৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপির এই প্রার্থী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল বারীকে হারিয়েছেন ১ হাজার ১০৪ ভোটে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা এলাকা ২০০২ সালে পৌরসভা ঘোষণা হওয়ার পর আটমাসের জন্য পৌর প্রশাসক হিসেবে সরকারি দায়িত্ব পালন করেন মকবুল। এরপর নির্বাচন। সেই নির্বাচনেও জয় আসে তার। ফলে এই পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত মেয়র হিসেবে নামফলকে খচিত হয় তারই নাম।   

এরপর ২০০৮ সালের পৌর নির্বাচন। কিন্তু সেবারের নির্বাচনে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল গফুরের কাছে পরাস্ত হতে হয় তাকে। নির্ধারিত পাঁচ বছর পার হওয়ার পর দুই বছর স্থগিত থাকে নওহাটা পৌরসভার নির্বাচন। অবশেষে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন। দীর্ঘ সাত বছর পর আবারও নওহাটার জনগণের রায় গিয়ে পড়ে প্রথম প্রশাসক ও মেয়র মকবুল হোসেনের ঝুড়িতে।   

মূলত ২০০৮ সালের পরাজয়ের পর নিজের ভুল থেকেই শিক্ষা নেওয়া শুরু হয় বলে জানান নবনির্বাচিত মেয়র মকবুল হোসেন। নানা সমীকরণে নিজেকে শুধরে নিয়ে নতুন করে চেষ্টা শুরু করেন মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে। পরাজিত হলেও মানুষের সেবায় নিয়োজিত রাখেন নিজেকে। তাকে বিপদে মধ্যরাতে ডেকেও পাননি এমন কথা তল্লাটে কেউ বলতে পারবেন না বলে দাবি করেন মকবুল।

১৯৬১ সালের ৩১ অক্টোবর নওহাটার রনোবাড়ী এলাকায় জন্মগ্রহণ করা বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন জানালেন, ১৯৭৯ সাল থেকে তার রাজনৈতিক জীবন শুরুর কথা। ওই বছর তিনি রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ শাখা ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক ছিলেন। স্নাতক পাস করার পর ১৯৮৬ সালে নওহাটা ইউনিয়ন বিএনপির কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। এর পর ১৯৯২ সালে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন।

২০০২ সালে নওহাটা পৌর বিএনপির নতুন কমিটিতেও সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ২০১০ সাল ও পরবর্তী সময় পার করে বর্তমান কমিটিতেও চতুর্থবারের মতো সভাপতি হন মকবুল।

নতুন মেয়র মকবুল হোসেন দাবি করে বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর এই সাত বছরে এলাকার নতুন কোনো উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে পৌর এলাকায় রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ভাঙ্গাচোরা অবস্থায়। যা কিছু আছে তার আমলেই করা। এজন্য মানুষ এবার তাকেই নির্বাচিত করেছেন। নিজের ভুল-ত্রুটি শুধরে নিয়ে তাই আবারও এলাকার উন্নয়নে কাজ শুরু করবেন।

এখানে দলীয় প্রতীক ফ্যাক্টর হলেও ব্যক্তি ইমেজ তার জয়ের পেছনে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে বলে মনে করেন মকবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার দলের প্রতীক আমার জন্য সহায়ক হলেও এর কারণে ভোটের মাঠে কাজ করতে গিয়ে অনেক স্থানে বাধাগ্রস্ত হতে হয়েছে। আমার লোকজন স্বাধীনভাবে ভোটের প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারেননি। প্রশাসনিক সাহায্যও তুলনামূলক কম পাওয়া গেছে’।  

‘কী নিয়ে কাজ শুরু করবেন?’ প্রশ্নের উত্তরে মকবুল হোসেন বলেন, ‘নওহাটা ও বায়া বাজার এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং পানি সঙ্কটে ভুগছেন। তাদের সমস্যার সমাধানেই শুরু হবে উন্নয়ন কাজ। এর পর যে এলাকায় কম ভোট পেয়েছি সেগুলোতে যাবো। তাদের সমস্যার কথা শুনবো। পরে দ্রুত সমাধানের জন্য চেষ্টা করবো। এছাড়া পৌর সুযোগ-সুবিধাগুলো বড়ানোর চেষ্টা করবো’।

তবে অজানা আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে নবনির্বাচিত এই মেয়র বলেন, ‘আমি বিএনপির প্রতীকে নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। পুরোদমে কাজ করার ইচ্ছে আছে। তবে কতোটা সুযোগ পাবো জানি না’।

কিন্তু সুযোগ পেলে পুরোটাই মানুষের কাজে লাগাবেন বলে আবারও জানান মেয়র।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৬
এসএস/এএসআর

** হয়রানি হতে দেবেন না সাতক্ষীরার তাজকিন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।