ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

মেয়রের ইন্টারভিউ

মেহেন্দীগঞ্জকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা করতে চান কামাল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৭ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৬
মেহেন্দীগঞ্জকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা করতে চান কামাল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বরিশাল: ‘আমি (প্রথমবার) মেয়র হওয়ার আগে মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভা ছিল তৃতীয় শ্রেণির। এখন আমার লক্ষ্য, এটিকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা।

প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করতে পারলে সাধারণ নাগরিকরা সুযোগ-সুবিধা বেশি পাবেন, উন্নয়নকাজ বাড়বে। আর এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমি কাজ করতে চাই’।

সম্প্রতি বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বার নির্বাচিত সরকার দলীয় মেয়র কামাল উদ্দিন খান।

নতুন মেয়র কামাল বলেন, মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভা অনেক বড়। এর আগে তেমনভাবে ট্যাক্স ধরা হয়নি। এখন যদি ঠিকভাবে তা নেওয়া হয়, তবে পৌরসভার আয় বাড়বে।
Mehendiganj_01
প্রথম মেয়াদের উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে তিনি বলেন, আমি প্রথমবার মেয়র হওয়ার পর পাতারহাট বন্দরের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে। পাতানিঘাট থেকে শুরু করে পাতারহাট বাজার ও দক্ষিণ দিকে বড় করে ড্রেন তৈরি করা হয়েছে। আগে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ছিল না। এখন প্রতিটি রাস্তার সঙ্গেই ড্রেনেজে ব্যবস্থা আছে। পৌরসভা এলাকায় সড়কবাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হবে।

মেয়র বলেন, মেহেন্দীগঞ্জের পাতারহাট বাণিজ্যিক এলাকা। এক সময় এর সঙ্গে কলকাতার সরাসরি নৌ-যোগাযোগ ছিল। এখন যেটাকে স্টিমার ঘাট বলা হয়, সেখানে তখন কলকাতা থেকে স্টিমার ভিড়তো।

তিনি বলেন, এ অঞ্চলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোনো ডেভেলপমেন্ট নেই। তবে এখান থেকে কাঁচামাল, যেমন সুপারি, পাট, মরিচ, ধান, সবজি পর্যাপ্ত পরিমাণে বেচা-কেনা হয়ে থাকে।

‘তাই এলাকার ব্যবসায়িক উন্নয়নে নদী ও খালবেষ্টিত যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর আমার নজর রয়েছে’- বলেন মেয়র কামাল।
Mehendiganj_03
তিনি বলেন, এ বন্দরকে ঘিরে ২৭টি ঘাট নির্মাণ করেছি। আগে ঘাট না থাকায় মালামাল আনা-নেওয়ায়র সময় শ্রমিকদের কষ্ট হতো। তারা পড়ে গিয়ে হতাহত হতেন। এখন এগুলোর কিছুই হয় না।

নিজের প্রথম মেয়াদে পৌর এলাকায় কর্মব্যস্ত মানুষের জন্য ৮/১০টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

শিশুদের সুযোগ ও মানসিক বিকাশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেহেন্দীগঞ্জের বর্তমান সংসদ সদস্য (পঙ্কজ দেবনাথ ) নির্বাচিত হওয়ার পরেই দীর্ঘদিন ধরে পতিত থাকা একটি জায়গায় শিশু পার্ক নির্মাণের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। এছাড়া পার্কে একটি বড় উদ্যান থাকবে, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো সভা-সমাবেশ করতে পারবে। বন্দরের রাস্তাঘাট আর বন্ধ করতে হবে না।

এলাকার মাদক ও দুনীর্তির বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান জানিয়ে কামাল বলেন, আমি নিজেই অনেক সময় দুর্নীতি ফেস করি। তাই নিজেই এর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছি। অনেক জায়গায় দুর্নীতির খবর পেলে ওসিকে নিয়ে চলে যাই। যাতে দুর্নীতিবাজরা ভয় পান।

তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে এমপি থেকে শুরু করে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ওসি, কাউন্সিলররা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। আমরা পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে মাদক, ইভটিজিং ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কমিটি করছি। এরই মধ্যে ৬/৭টিতে কমিটি করা হয়েছে।
Mehendiganj_02
১৯৬৭ সালে পাতারহাট মুসলিম হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়াকালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি কামালের। পরে পাতারহাট আরসি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন ১৯৬৯ সালে। ১৯৭৮ সালে মেহেন্দীগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক হন তিনি।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৪ সালে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ পান। বর্তমানে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

১৯৯২ সালে ও ১৯৯৭ সালে মেহেন্দীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভায় উন্নীত হলে ১৯৯৮ সালে প্রথম প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৯৯ সালে পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান ও ২০১১ সালে নির্বাচিত মেয়রের দায়িত্ব নেন।

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন কামাল। তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট পান ১২ হাজার ২০৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মো. গিয়াসউদ্দিন দিপেন পান ১ হাজার ৪৮৬ ভোট আর ইসলামী  আন্দোলনের প্রার্থী  মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খোকন গাজী (হাতপাখা) পান ১ হাজার ৫৬৯ ভোট।

বাংলাদেশ সময়:  ১৯০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ২০১৬
এসআর/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।