ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

বাংলানিউজে প্রকাশিত ড. কাজী ফারুকের সাক্ষাৎকারের প্রতিবাদ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২২
বাংলানিউজে প্রকাশিত ড. কাজী ফারুকের সাক্ষাৎকারের প্রতিবাদ

“প্রশিকা চেয়ারম্যান ড. কাজী ফারুকের সঙ্গে একটি সন্ধ্যা” শিরোনামে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট মো. সোলায়মান। তিনি নিজেকে প্রশিকার আইন বিভাগের পরিচালক বলে দাবি করেছেন।

গত ৪ আগস্ট ওই প্রতিবাদলিপি বাংলানিউজের সম্পাদক বরাবর পাঠানো হয়।

অ্যাডভোকেট মো. সোলায়মানের দাবি, গত ২৯ জুলাই, ৩১ জুলাই এবং ০২ আগস্ট তারিখে বাংলানিউজে প্রকাশিত তিন পর্বের সাক্ষাৎকারে যে শিরোনাম ব্যবহার করা হয়েছে, তা আইনগতভাবে বৈধ নয়। কারণ ড. কাজী ফারুক আহম্মদ প্রশিকার চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারিত। তিনি প্রশিকার সাবেক চেয়ারম্যান।

 

অ্যাডভোকেট মো. সোলায়মান স্বাক্ষরিত প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে—

১. সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ২৩২৩/২০০৯ নং সিভিল রিভিশন ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ১৬৯৭/২০০৯ নং লিভ টু আপিল মামলার রায় অনুযায়ী ২৪.০৫.২০০৯ ইং তারিখ থেকে ড. কাজী ফারুক আহম্মদ প্রশিকার চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারিত এবং উপরোক্ত মামলার রায় মতে ড. কাজী ফারুক আহম্মদ প্রশিকার সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বটে।  

এমতাবস্থায় “প্রশিকা চেয়ারম্যান ড. কাজী ফারুকের সঙ্গে একটি সন্ধ্যা” শিরোনামটি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরিপন্থী এবং সর্বোচ্চ আদালতের রায়/আদেশ ভঙ্গ করা হয়েছে। এ ধরনের পরস্পর বিরোধী (Controversial) বিষয়ে উভয় পক্ষের নিকট থেকে আদালতের রায়সমূহের সই মহুরি নকল সংগ্রহ করে পক্ষ-বিপক্ষের বৈধ অধিকার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর আপনার মতো একজন সম্পাদকের উক্ত শিরোনামে ড. কাজী ফারুক আহম্মদের সাক্ষাৎকার নেওয়া উচিত ছিল। গত ০২.০৮.২০২২ ইং তারিখ আপনার সম্পাদনায় কাজী ফারুকের ১৩ পৃষ্ঠার যে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে ইহার ১০ নং পৃষ্ঠায় আপনি ড. কাজী ফারুককে প্রশ্ন করেছেন, একটি মহল আপনাকে প্রশিকার চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিল। এ বিষয়ে কী করলেন? উত্তরে ড. কাজী ফারুক বলেছেন, “আমি তাদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে ঘোষণামূলক একটি মামলা করেছি। এই মামলা থেকে হাইকোর্টে তাঁরা ৭টি মামলা আনেন এবং আমি একটি মামলা আনি। এভাবে মোট ৮টি মামলা হাইকোর্টে ওঠে। এই ৮টি মামলা থেকে আপিল বিভাগে ১১টি মামলা হলো। হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের মামলা মিলে মোট ১৯টি মামলা হলো। এগুলোর মধ্যে ১৮টি মামলায় আমি জিতেছি। ১টি মামলা স্থগিত আছে।

২. কাজী ফারুকের দায়েরকৃত ঘোষণামূলক মামলার নম্বর কত, কোন আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে এবং মামলার ফলাফল / রায় কী হলো, তা না বলে তিনি ওই মামলা থেকে কতটি মামলার উদ্ভব হয়েছে, তার মধ্যে ১টি স্থগিত আছে, বাকিগুলিতে তিনি জিতেছেন, এসব বলছেন। তার এসব বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও তঞ্চকতামূলক বটে।

৩. আপনি পুনরায় প্রশ্ন করেছেন—“প্রশিকা নিয়ে চক্রান্তকারী সিরাজুল ইসলাম গং এর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন?” উত্তরে কাজী ফারুক বললেন, “২০২০ সালে ওদুদ, মাহাবুবুল ও মাসরুল বিভিন্ন মামলায় পরাজিত হলেন। তখন সিরাজুল ইসলাম প্রশিকার প্রধান নির্বাহী সেজে এবং আরো কয়েকজন মিলে একজোট হয়ে প্রশিকার নাম ব্যবহার করে একটা নকল অফিস নিয়ে কার্যক্রম চালাতে থাকেন। তারা রোকেয়া ইসলামকে চেয়ারম্যান বানিয়ে ক্যালেন্ডার, প্যাড ও ডায়েরি ছাপিয়েছেন। নিয়ম বহির্ভূতভাবে কতগুলো নীতিমালাও তারা তৈরি করেছেন। ডেসটিনি বা এমএলএম কোম্পানির মতো কিছু স্কিমও তাঁরা চালু করেছেন। যেমন— লাখ টাকা দিলে প্রতিমাসে এক হাজার টাকা মিলবে। তিন বছরে মানুষকে তাঁরা লাখপতি বানিয়ে দেবেন। যা লোক ঠকানো বা প্রতারণামূলক। তারা প্রশিকার সুনামটা ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। ” তার এ ধরনের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। গত ০৯/১১/২০২১ ইং তারিখে ড. কাজী ফারুক মিরপুর মডেল থানায় ৬৯৪ নং জিডির মাধ্যমে হুবহু উপরোক্ত অভিযোগ দায়ের করলে মিরপুর মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সরেজমিনে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ মুখ্য মহানগর হাকিম সাহেবের আদালত (মিরপুর) ঢাকায় প্রেরণ করেন এবং বিজ্ঞ আদালত এই মর্মে আদেশ প্রদান করেন যে, “অভিযোগের কোনো যৌক্তিকতা না পাওয়া এবং বিজ্ঞ আদালত ও সকল নির্দেশনামূহের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন পূর্বক উক্ত বিবাদীদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হইল না। ” (উক্ত ৬৯৪ নং জিডির আলোকে বিজ্ঞ মুখ্য মহানগর হাকিম সাহেবের আদালত (মিরপুর) এর আদেশ সংযুক্ত করা হলো। প্রকাশ থাকে যে, বিশেষ সঞ্চয় স্কিম ও লাখপতি সঞ্চয় স্কিমসহ অন্যান্য সঞ্চয় স্কিমের মাধ্যমে প্রতিমাসে প্রশিকায় সাধারণ জনগণ যে পরিমাণ টাকা জমা করে, ইহার রিপোর্ট এনজিওদের আর্থিক নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)-কে প্রতিমাসে প্রদান করা হয়। যদি এই ধরনের স্কিমসমূহ লোক ঠকানো কিংবা প্রতারণামূলক হতো তাহলে এমআরএ কর্তৃপক্ষই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের এখতিয়ার রাখেন এবং গ্রহণ করতেন।

৪. আপনার পরবর্তী প্রশ্ন— “বর্তমানে প্রশিকা নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আপনি কী পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছেন?” উত্তরে কাজী ফারুক বলেছেন- “প্রশিকার দিক থেকে তাদের দুষ্কর্মের যতগুলো প্রমাণ আমরা পেয়েছি, সবগুলোতে মামলা করেছি। সিরাজুল ইসলামের নামে ৯টি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো প্রক্রিয়াধীন ও তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। তাঁরা বলেছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তার বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যেহেতু কোর্টে মামলা রয়েছে, তাই এটা অনেক সময়সাপেক্ষ। এই ফাঁকে তাঁরা প্রচুর টাকা দেশের বাইরে পাচার করে ফেলেছেন বলে মনে করি। আমি আশংকা করছি, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তাঁরা টাকা পয়সা নিয়ে দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে পারেন। ই-ভ্যালি বা ডেসটিনির বিষয়ে সরকার যেভাবে নিজে থেকেই ব্যবস্থা নিয়েছে, আমরা চাচ্ছি সরকার এখানেও নিজ উদ্যোগে তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। ”

প্রকৃতপক্ষে কাজী ফারুকের দায়েরকৃত মামলায় তিনি সর্বনিম্ন আদালত থেকে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত প্রত্যেকটি মামলায় হেরে গিয়ে উপরোক্ত মিথ্যা, বানোয়াট, প্রতারণামূলক ও তঞ্চকতাপূর্ণ বক্তব্য অত্র সাক্ষাৎকারে আপনার বরাবরে উপস্থাপন করেছেন। যদি তিনি তার দায়েরকৃত মামলায় যে আদালত তার পক্ষে রায় দিয়েছেন সেই আদালতের মাধ্যমেই তিনি সিরাজুল ইসলাম গংদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের তাৎক্ষণিক সুযোগ আইনগতভাবে নিতে পারতেন। অর্থাৎ তার উপরোক্ত বক্তব্যেই প্রতীয়মান হয়েছে যে, তিনি প্রকৃতপক্ষে সকল মামলায় হেরে গিয়েছেন। তাই কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে আপনার পত্রিকার মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে প্রশাসন ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক সিরাজুল ইসলাম গংদের হয়রানি ও প্রশিকার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য প্রশাসন ও সরকারের নিকট উপরোক্ত মিথ্যা বক্তব্য তুলে ধরে ফাঁকা মাঠে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

৫. আপনার সর্বশেষ প্রশ্ন— “আপনার (কাজী ফারুক) নেতৃত্বে প্রশিকা যাতে নতুন উদ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেজন্য সরকারের কাছে আপনার চাওয়া কী?” উত্তরে কাজী ফারুক বলেছেন— “৩০ বছর ধরে আমাদের ওপর লাগাতার হামলা আক্রমণ, দমন-পীড়ন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত দুইবার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার একবার এবং আমাদের ভেতরের কুচক্রী মহল দ্বারা বার বার, বহুবার। এই ৩০ বছর ধরে আমরা দেশ-মাটি-মানুষের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করে গেছি। মামলাতেও জিতেছি। হাইকোর্টে সুপ্রিম কোর্টে সব মিলিয়ে ৭৯টি মামলা হয়েছে। ৭০টি আমরা জিতেছি। আর ৯টি মামলা স্থগিত আছে। ”

কাজী ফারুকের উপরোক্ত বক্তব্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া ও ভিত্তিহীন। এ ধরনের ধোঁয়াশামূলক উত্তর দিয়ে তিনি আপনার সাথে প্রশিকার বৈধ কর্তৃপক্ষের সাথে প্রতারণা করেছেন এবং আপনি তা প্রচার করে জনগণের সাথে প্রতারণা করেছেন মর্মে তথ্য ও যোগাযোগ আইন-২০০৬ এর অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন। আপনার এ ধরনের উপরোক্ত সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত ও প্রচারিত হওয়ায় প্রশিকার সুনাম ২০ (বিশ) কোটি ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) লক্ষ ৭৬ (ছিয়াত্তর) হাজার টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

প্রকৃত ঘটনা
প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের গভার্নিং বডির সাবেক চেয়ারম্যান কাজী ফারুক আহম্মদের স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড, অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং প্রশিকাকে তার রাজনৈতিক দল “ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন”-এর একটি অঙ্গ সংগঠনে পরিণত করার অভিপ্রায়ে প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরের কর্মীদের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয় এবং তা এক পর্যায়ে আন্দোলনে রূপ নেয়। যার ফলে বিগত ২৪. ০৫. ২০০৯ তারিখে প্রশিকার গভার্নিং বড়ির ১০৫তম সভার ৯ সদস্যের মধ্যে ৮ জনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজী ফারুক আহম্মদকে গভার্নিং বডির চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করা হয়। অতপর:

১. ২৫.০৫.২০০৯ তারিখ অপসারিত চেয়ারম্যান কাজী ফারুক আহম্মদ বাদী হয়ে সহকারী জজ আদালত, ঢাকায় তার অপাসরণকে অবৈধ ঘোষণা করার জন্য ঘোষণামূলক মোকদ্দমা (৩০২/২০০৯) রুজুর পাশাপাশি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু বিজ্ঞ জজ ৩১.০৫.২০০৯ তারিখ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ নামঞ্জুর করে বর্তমান কমিটির চেয়ারম্যান জনাব অ্যাডভোকেট এম. এ ওয়াদুদ ও প্রধান নির্বাহী জনাব মাহবুব-উল-করিমকে প্রশিকা পরিচালনার দায়িত্বে অব্যাহত রাখার আদেশ প্রদান করেন।

২. ০১.০৬.২০০৯ তারিখ অতঃপর কাজী ফারুক আহম্মদ ঢাকা জেলা জজ আদালতে ১৫৮/২০০৯ বিবিধ আপিল দায়ের করলে বিজ্ঞ জেলা জজ উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ ও শুনানি শেষে ০৭.০৬.২০০৯ তারিখ বাদীর আপিল খারিজ করে দেন।

৩. ৩০.০৬.২০০৯ তারিখ কাজী ফারুক আহম্মদ উপর্যুক্ত খারিজের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে ২৩২৩/২০০৯ নং সিভিল রিভিশন মামলা দায়ের করেন। এই মামলার শুনানি শেষে ১১.০৮.২০০৯ তারিখ মহামান্য আদালত এই মর্মে আদেশ প্রদান করেন যে, “.... in the mean time both the parties are directed to maintain the Status quo till disposal of the suit”, এবং অবজারবেশনে বলেন, “The defendant opposite parties cannot create any hindrance. if the plaintiff-petitioner alone wants to enter the office of the PROSHIKA and to take sit with the present Chairman. Present Chief Executive and other members of the Governing Body of PROSHIKA as a former President and former Chairman of the Governing Body of PROSHIKA without any procession and rally to damage the peaceful atmosphere of PROSHIKA.”

অতঃপর কাজী ফারুক আহম্মদ Status quo (স্থিতাবস্থা) কে চ্যালেঞ্জ না করে নিম্ন আদালতের ৩০২ নং মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কেন তাঁকে সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বলা হলো এ দুটো শব্দ প্রত্যাহার করার জন্য মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে ১৬৯৭/০৯ সিপি ফাইল করেন এবং উক্ত ১৬৯৭/০৯ নং মামলার বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ এই মর্মে রায় প্রদান করেন যে, “The order of status quo as directed by the learned Single Judge of the High Court Division shall remain in force till disposal of the suit .”

কাজী ফারুক আহম্মদ উল্লেখিত রায়সমূহ অমান্য করিয়া নিজে চেয়ারম্যান দাবি করে কর্মীদের বরখাস্ত, পদোন্নতি, বদলি, সংস্থার জমি বিক্রি/বন্ধক/বায়না ইত্যাদি করার কারণে তার বিরুদ্ধে ১৭.০১.২০১৬ ইং তারিখ প্রশিকার চেয়ারম্যান এম. এ ওয়াদুদ মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে ১৩/২০১৬ (ভায়ো) মামলা দায়ের করেন।

উপর্যুক্ত ভায়োলেশন মামলায় ২৮.০৯.২০১৬ তারিখ মহামান্য আদালত ১৬.০৩.২০১৬ তারিখের রুল Absulute ঘোষণা করেন এবং বিবাদী কাজী ফারুক আহম্মদকে ৭ দিনের মধ্যে তার নিয়ন্ত্রণে রাখা অফিস বাদীকে বুঝিয়ে দেওয়ার আদেশ এবং ৬০০০/- (ছয় হাজার) টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৭ দিনের সিভিল জেল প্রদান করেন। এই রায় কার্যকর করার জন্য ঢাকার রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ৭ দিনের মধ্যে বিবাদীকে উচ্ছেদ করে বাদীকে অফিস বুঝিয়ে দেয়ার জন্যও নির্দেশ প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ১৩/২০১৬ নং ভায়োলেশন মামলার রায়ের বিরুদ্ধে কাজী ফারুক আহম্মদ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনে লিভ টু আপিল দায়ের করলে মহামান্য আদালত শুনানি শেষে ০৫.১০,২০১৭ তারিখে প্রদত্ত হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় বাতিল করে মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য হাইকোর্ট ডিভিশনের মহামান্য বিচারপতি জনাব মজিবুর রহমান মিয়ার একক বেঞ্চে পাঠান।

মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের একক বেঞ্চের বিচারক ১৩/২০১৬ (ভায়ো) মামলার শুনানি শেষে ২৩.০১.২০১৮ তারিখ প্রদত্ত রুল Absolute ঘোষণা করে বিবাদী কাজী ফারুক আহম্মদকে ১ মাসের সিভিল জেল প্রদান করেন। যদিও ২৪.০১.২০১৮ তারিখ কাজী ফারুক আহম্মদদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় চেম্বার জজ এই আদেশটি ৪ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। এই ১৮৩৯/২০১৮ নং মামলার শুনানি মাননীয় অ্যাপিলেট ডিভিশনে শুনানীর জন্য অপেক্ষা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে।

এছাড়াও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) কাজী ফারুক আহম্মদের বিরুদ্ধে যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ ১ম আদালত, রাজশাহীতে ৩৮৪/১৬, ৩৮৫/১৬, ৩৮৬/১৬, ৩৮৭/১৬ এবং ৩৮৮/১৬ নং (নেগোসিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্টের ১৩৮ ধারা মতে) সি.আর মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলাগুলিতে উল্লেখিত ধারার অপরাধের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কাজী ফারুক আহম্মদকে দোষী সাব্যস্থ করে ০৫ (পাঁচ) বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন এবং বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। ২৩২৩/০৯ রিভিশন মামলায় মহামান্য হাইকোর্ট কাজী ফারুক আহম্মদকে সাবেক চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন এবং ১৬৯৭/০৯ নং আপিলে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ হাইকোর্টের উক্ত রায় হুবহু বহাল রেখেছেন। তাছাড়া উক্ত আদেশদ্বয় ভঙ্গের কারণে উদ্ভূত ভায়োলেশন মামলায় বিচারকগণ যথাক্রমে ০৭ (সাত) দিন ও ০১ (এক) মাসের সিভিল জেল প্রদান করেছেন। এই সমস্ত রায়ের আলোকে ড. কাজী ফারুক আহম্মদ উক্ত সাক্ষাৎকারটি আপনার বরাবরে উপস্থাপন করার আইনগত এখতিয়ার রাখেন না মর্মে আপনিও তা প্রকাশ ও প্রচার করার এখতিয়ার রাখেন না।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।