ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

কুরআনের পাখিদের কলকাকলিতে মুখর রাজশাহী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
কুরআনের পাখিদের কলকাকলিতে মুখর রাজশাহী অডিশন চলছে। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: বসুন্ধরা গ্রুপের আয়োজনে হাফেজদের সর্ববৃহৎ মিলনমেলা জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ২০২৩ এর রাজশাহী বিভাগের অডিশন চলছে বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে।

এ প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই রাজশাহীর আট জেলা থেকে জড়ো হয় কোরআনের পাখিরা।

তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পদ্মা পাড়ের এই মহানগর।

অডিশনস্থল তো বটেই; আশপাশের এলাকাতেও দেখা যায় প্রাণ চাঞ্চল্য। ছোট্ট ছোট্ট কুরআনে হাফেজদের তেলাওয়াত শুনে বিমুগ্ধ হয়ে পড়েন। প্রতিযোগিতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠেন সবাই। এর মধ্য দিয়েই আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলতে থাকে রাজশাহী ডিভিশনের হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা।

ক্ষুদে হাফেজ প্রতিযোগীরা সকাল থেকে ছুটে আসেন রাজশাহীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান মিলনায়তনে শুরু হয়েছে রেজিস্ট্রেশন পর্ব শুরু হয়। প্রথমে ছয়টি বুথে রেজিস্ট্রেশন করা হয় এই কুরআনের পাখিদের। রেজিস্ট্রেশন শেষে সকাল সোয়া ১০টায় শুরু হয়ে যায় অডিশনপর্ব। বিকেল পাঁচটায় এই খবর লেখা পর্যন্ত দ্বিতীয় রাউন্ডে ৩০ জনকে মনোনীত করা হয়েছে।

এ সময় ১৫ বছরের কম বয়সী ৩০ পারা হাফেজদের সর্ববৃহৎ মিলনমেলায় পরিণত হয় জাতীয় এই হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা। রাজশাহীতে এখন ‌‘কুরআনের নূর পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা’- রাজশাহী বিভাগের অডিশন চলছে কামারুজ্জামান মিলনায়তনে।

বগুড়ার কাহালু উপজেলার ভোলতা জামিউল উলুম হাফিজিয়া ও ক‌ওমী নূরানি মাদরাসা থেকে ১৮ জন হাফেজকে রেজিস্ট্রেশনের জন্য নিয়ে আসছেন তাদের শিক্ষক মো. ওবায়দুল হক।

তিনি বলেন, সবাইকে রেজিস্ট্রেশন করেছি। অডিশন চলছে। আশা আছে এখান থেকে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হবে। দিন-রাত পরিশ্রম করে তাদেরকে এই প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করেছি। বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ ছোট্ট কুরআনের হাফেজদের জন্য এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।

১৩ বছর বয়সী হাফেজ জোবায়ের আহমাদসহ তার ১৩ জন বন্ধু প্রতিযোগিতায় রেজিস্ট্রেশনের আসছেন বগুড়ার জয়পুরপাড়া থেকে। সঙ্গে এসেছেন তাদের শিক্ষক। জোবায়ের জানান, তাদের শিক্ষক দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন তাদেরকে এই প্রতিযোগিতায় নাম লেখানোর জন্য। তারা অডিশন পর্বে সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবেন, যাতে তার শিক্ষকের স্বপ্নপূরণ হয়‌।

রাজশাহী ভেন্যুর অডিশনের সমন্বয়ক দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলাম জানান, এবারের প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী ৫ জনকে পুরস্কৃত করা হবে। তার মধ্যে প্রথম পুরস্কার ১০ লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৭ লাখ টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ৫ লাখ টাকা, চতুর্থ ও পঞ্চম পুরস্কার হিসেবে আছে ২ লাখ টাকা।

প্রতিযোগিতার বিচারক বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিউদ্দিন কাসেম জানান, রাজশাহী থেকে প্রথমে ৩০ জন নির্বাচিত করা হবে। এরপর ১০ জনকে বাছাই করা হবে। এরপর চূড়ান্তভাবে ৩ জন পাবে ঢাকার টিকিট।

তিনি জানান, ইতোমধ্যে সিলেট ও চট্টগ্রামে জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ২০২৩ এর অডিশন হয়েছে। আজ রাজশাহীতে এই আয়োজন চলছে। মাঠপর্যায়ে এ প্রতিযোগিতা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কারণ কুরআনের পাখিদের জন্য বাংলাদেশে এত বেশি পুরস্কার আর কখনও কোনোদিন ছিল না। প্রথম পুরস্কার বিজয়ীর পরিবার, শিক্ষকসহ চারজন উমরাহ সুযোগ পাবেন। তাই প্রকৃত পুরস্কার ২০ লাখ টাকার বেশি।

সম্প্রতি বসুন্ধরা গ্রুপ ১০৪ জন হাজিকে হজের সুযোগ করে দিয়েছে বলেও এ সময় বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিযোগিতার কারণে কুরআনের পাখিদের সহিহভাবে শেখার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে।

এদিকে বসুন্ধরা জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ২০২৩ রাজশাহী অডিশনের চূড়ান্ত পর্বে বিচারক থাকার কথা রয়েছে, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিববুল্লাহ বাকী আল নদভী, পেশ ইমাম শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিউদ্দিন কাসেম, সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান ও গুলশান মসজিদের খতিব মরতুজা হাসান ফয়েজি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩

এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।