ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

নির্মাণশৈলীতে অনন্য খুলনার তালাবওয়ালা জামে মসজিদ

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
নির্মাণশৈলীতে অনন্য খুলনার তালাবওয়ালা জামে মসজিদ

খুলনা: মসজিদ এলাকায় প্রবেশ করতেই চোখ জুড়িয়ে যায় সবার। দূর-দূরান্ত থেকে নামাজ পড়তে এখানে আসেন মুসল্লিরা।

মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে চারদিকে স্থাপন করা হয়েছে লাইটপোস্ট। নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনাও। এ মসজিদটিতে রয়েছে সুবিশাল মিনার। যার উচ্চতা ২২৬ ফুট। খুলনা বিভাগের সর্বোচ্চ মিনার এটি। মসজিদ ও মিনারটির পুরোটাই সাদা টাইলস দিয়ে তৈরি। সুউচ্চ মিনার ছাড়াও মসজিদটিতে রয়েছে চারটি গম্বুজ।

দূর-দূরান্ত থেকে এ মিনার দেখতে দর্শনার্থীওরা এখানে আসেন। মসজিদের তিন পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সর্বোচ্চ এবং অন্যতম সুন্দর মিনার দেখে মুগ্ধ হন সবাই। বিশেষ করে, রাতে কৃত্রিম আলোয় চারপাশের পরিবেশ দেখে মনে হয় জান্নাতের একটি সুসজ্জিত বাগান।

খুলনা মহানগরীর মুসলমান পাড়ায় ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জামিআ ইসলামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা’। এই মাদ্রাসাটির দৃষ্টিনন্দন বিশাল মসজিদটির নাম তালাবওয়ালা জামে মসজিদ (পুরাতন তাবলিম মসজিদ)।  

১৯৭৯ সালে কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ শ্রেণি দাওরায়ে হাদিসের সূচনা হয়। ২০০০ সালে ইসলামী আইন গবেষণা অনুষদ (ইফতা) এবং তাফসির বিভাগ চালু করা হয়। দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষা কারিকুলাম অনুসারে ৪৮ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থীকে পাঠদান করেন। মাতৃভাষা বাংলা ছাড়াও তারা আরবি, উর্দু ও ফার্সি ভাষা শেখার সুযোগ পায়। আবাসিক শিক্ষাব্যবস্থাপনায় এতিম ও দরিদ্রদের শিক্ষাগ্রহণে বিশেষ সুযোগ আছে এ মাদ্রাসাটিতে।

আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.)-এর অনুপ্রেরণায় বিখ্যাত দানবীর মরহুম হাজী আব্দুল হাকীম জমাদ্দারের পৃষ্ঠপোষকতায় মাওলানা মুজিবুর রহমান (রহ.) এটি প্রতিষ্ঠা করেন।

মিনার থেকে প্রধান ফটক পর্যন্ত কারুকার্য যেন একটি থেকে আরেকটি উচ্চতর। কৃত্রিম কারুকার্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একাত্মতা ঘটায় অপরূপ এক লাবণ্যের প্রকাশ ঘটেছে এই মসজিদে। এখানে গেলে সহজেই দেখা মিলবে অর্কিড, বনসাই, সাইকাস, পাইনাসসহ নানা ধরনের শোভা বর্ধনকারী উদ্ভিদের।

এছাড়া চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন জাতের সুপারি ও নারিকেলগাছ। এই মসজিদের প্রধান আকর্ষণ হলো মসজিদের সামনে অবস্থিত শাহি গেট। এছাড়া এখানে রয়েছে আধুনিক শৌচাগার, অজুখানা, গোসলখানা।

মসজিদটিতে রমজান মাসে দুই ধরনের তারাবির নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। একটি হলো সাধারণ নিয়ম, ২৭ রমজান যেখানে কোরআন খতম করা হয়। আরেকটি হলো মাত্র ছয় দিনে কোরআন খতম করা হয়। ৬ দিনের খতম তারাবির মুসল্লিদের মধ্যে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী। এখানে একসঙ্গে প্রায় ২ হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

রোববার (৯এপ্রিল) সকালে মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা অহিদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মুশতাক আহমদ। মাদরাসাটিতে বর্তমানে ১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। এটি কোনো ধরনের সরকারি সাহায্য ছাড়াই পরিচালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
এমআরএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।