ঢাকা, বুধবার, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ষড়যন্ত্র করার ভয়াবহতা নিয়ে ইসলাম যা বলে

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৩
ষড়যন্ত্র করার ভয়াবহতা নিয়ে ইসলাম যা বলে প্রতীকী ছবি

‘অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে সে গর্তে নিজেকেই পড়তে হয়’ এই প্রবাদবাক্যটি আমাদের খুব পরিচিত। কিন্তু আমাদের বাস্তব জীবনে অনেকেই এই কথাটি মূল্যায়ন করেন না।

কিন্তু এই প্রবাদটি কোরআন-হাদিসের সঙ্গে মিলে যায়।

পবিত্র কোরআন-হাদিসের ভাষ্যমতে, যারা অন্যের অকল্যাণ চায়, অন্যকে ফাঁসিয়ে নিজেকে বড় করতে চায়, মহান আল্লাহ তাদের ওপর নারাজ হন। ফলে তারা বাহ্যিকভাবে কোথাও সফল হলেও সেই সফলতা তাদের চূড়ান্ত ব্যর্থতা ডেকে আনে।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘কুচক্রান্ত তাকেই ঘিরে ধরবে যে তা করবে। ’ (সুরা : ফাতির, আয়াত : ৪৩)
অর্থাৎ মানুষ কূট ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করে; কিন্তু তারা জানে না যে মন্দ কর্মের ফল মন্দই হয় এবং তার শাস্তি শেষ পর্যন্ত কূট ষড়যন্ত্রকারীর ওপরই বর্তায়। যা তারা অনেক সময় দুনিয়া থেকেই ভোগ করতে শুরু করে। তারা অভিশপ্ত।

আমাদের নবীজি (সা.) তাদের অভিশাপ দিয়েছেন। প্রিয় নবীজি (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪১)

যারা অন্যের বিরুদ্ধে কূটচক্রান্ত করে, অন্যকে কোণঠাসা করে দিতে চায়, কিংবা আর্থিকভাবে, মানসিকভাবে বা শারীরিকভাবে অক্ষম করে দিতে চায়, তাদের চক্রান্ত সব সময় কাজ না-ও করতে পারে, কিন্তু তাদের এই পাপের শাস্তিস্বরূপ মহান আল্লাহ তাদের ক্ষতি অবশ্যই করবেন, যা ঠেকানোর ক্ষমতা পৃথিবীর কারো থাকবে না। মজলুমের একবিন্দু চোখের পানি সুনামি হয়ে জালিমকে ধ্বংসের সাগরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়, কিন্তু জালিম তা অনুভব করতে পারে না।

আবু সিরমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ তাআলা তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাআলা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন। (তিরমিজি,  হাদিস : ১৯৪০)

সবচেয়ে বড় কথা হলো, এ ধরনের লোক কিয়ামতের দিন দেউলিয়া হয়ে যাবে। সেদিন তাদের কূটচাল, প্রভাব কিছুই কাজে আসবে না। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের প্রশ্ন করেন, তোমরা কি জানো, দেউলিয়া কে? তাঁরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমাদের মধ্যে দেউলিয়া হচ্ছে ওই ব্যক্তি, যার দিরহামও (নগদ অর্থ) নেই, কোনো সম্পদও নেই।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে ওই ব্যক্তি হচ্ছে দেউলিয়া যে কিয়ামত দিবসে নামাজ, রোজা, জাকাতসহ বহু আমল নিয়ে উপস্থিত হবে এবং এর সঙ্গে সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কারো রক্ত প্রবাহিত (হত্যা) করেছে, কাউকে মারধর করেছে ইত্যাদি অপরাধও নিয়ে আসবে। সে তখন বসবে এবং তার নেক আমল থেকে এই ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে, ওই ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে। এভাবে সম্পূর্ণ বদলা (বিনিময়) নেওয়ার আগেই তার সৎ আমল নিঃশেষ হয়ে গেলে তাদের গুনাহ তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে, তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১৮)

মহান আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।