বিক্রেতারা নিজেদের পণ্য বিক্রি করতে নানা কৌশল অবলম্বন করেন। এরমধ্যে একটি হচ্ছে নিজের পণ্যের প্রচারে ক্রেতাদের কাছে মিথ্যা শপথ করেন বিক্রেতা বা ব্যবসায়ী।
পণ্যের গুণগত মান বাড়িয়ে বলেন, দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করেন না তারা। পণ্যকে আকর্ষণীয় করতে নানান ছলের আশ্রয় নেন ব্যবসায়ীরা।
এরূপ মিথ্যা শপথকারী ও কসমকারী ব্যবসায়ীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম।
হাদিস বলছে, কেনা-বেচায় মিথ্যা কসম অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। মিথ্যা বলে কেনাবেচা করা হারাম। তাই মিথ্যা কসম পরিহার করা উচিত।
এ বিষয়ে তিরমিজি শরিফের ১২১১ নম্বর হাদিসে স্পষ্ট হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মিথ্যা কসমকারী ব্যবসায়ীর প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টি দেবেন না এবং তাদের পবিত্রও করবেন না। আর তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ’
এ কথা শুনে আল্লাহর রাসুলকে (সা.) সাহাবী আবু জার (রা.) জিজ্ঞেস করেন, হে রাসুল, আমাদের জানান, কারা ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত?
রাসুল বলেন, টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী, উপকার করে খোঁটা প্রদানকারী এবং ওই ব্যবসায়ী যে মিথ্যা কসম করে তার পণ্য বিক্রি করে। (তিরমিজি, হাদিস : ১২১১)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ব্যবসায় বেশি কসম খাওয়া থেকে বিরত থাকো। এর দ্বারা পণ্য বিক্রি বেশি হয়, কিন্তু বরকত কমে যায়। (মুসলিম, হাদিস : ৪০১৮)
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, কসম খেলে সম্পদের কাটতি বাড়ে, কিন্তু বরকত কমে যায়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৩০২)
ইসলামি অর্থনীতির বিধান অনুযায়ী, পণ্যের সব অবস্থা (দোষ-ত্রুটি থাকলে তাসহ) ক্রেতাকে খুলে বলতে হবে, অন্যথায় বিক্রি শুদ্ধ হবে না এবং ক্রেতার তা ফেরত দেওয়ার অধিকার থাকবে। পণ্যের দোষ না বলে ধোঁকা দিয়ে বিক্রি করা হারাম। বিক্রেতা পণ্যের যে গুণ-বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছিলেন পরে তার বিপরীত প্রমাণিত হলে, যেমন—বলেছিল রং পাকা বা অমুক কম্পানির অথচ তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এ ক্ষেত্রে ক্রেতা সেটা ফেরত দেওয়ার অধিকার রাখে।
বিক্রীত পণ্যের কোনো দোষ প্রকাশ পেলে ক্রেতার তা ফেরত দেওয়ার অধিকার থাকবে। যদি বিক্রেতা দোষ-ত্রুটি বলার পরও ক্রেতা সেই পণ্য কেনেন তবে ওই দোষ-ত্রুটির কারণে পণ্য ফেরত দেওয়ার অধিকার থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
এসএএইচ