ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

জন্মান্ধ জুবাইর ১০ বছরেই হাফেজ, ‘কুরআনের নূর’ অডিশনে পেল ইয়েস কার্ড

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩
জন্মান্ধ জুবাইর ১০ বছরেই হাফেজ, ‘কুরআনের নূর’ অডিশনে পেল ইয়েস কার্ড হাফেজ মো. জুবাইর হোসেন। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: জন্ম থেকেই আলো নেই দুচোখে। কিন্তু মেধা আর ইচ্ছেশক্তিতে মাত্র ১০ বছর বয়সে হয়েছে হাফেজ।

আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা গ্রুপ’-এ ঢাকা অঞ্চলের উত্তর জোনের অডিশন পর্বে বাছাইয়ে অংশ নিয়ে পেয়েছে ইয়েস কার্ডও। এই হাফেজের নাম মো. জুবাইর হোসেন (১১)।  

জুবাইরের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদদকালন্দিয়া বাজারে। সে ঢাকার দক্ষিণখান এলাকার মাদ্রাসাতুর রহমান আল আরাবিয়ার ছাত্র।

ঢাকা অঞ্চলের উত্তর জোনের অডিশনে জুবাইরের মতো ৬০ হাফেজ প্রথমে ইয়েলো কার্ড পায়। পরে এদের মধ্য থেকে ২১ জনকে বাছাই করে ‘ইয়েস কার্ড’ দেন বিচারকরা। এই ২১ হাফেজ প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ে অংশ নেবে।

ইয়েস কার্ড পাওয়া জুবাইরের সঙ্গে কথা বলে বাংলানিউজ। নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে এই হাফেজ বলে, ‘আলহামদুলিল্লাহ খুবই ভালো লাগছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। ’

জুবাইরের বাবা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমরা টেলিভিশনে দেখলাম এই অনুষ্ঠানটা। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নিই, আমার ছেলে ভালোভাবে হাফেজ হয়েছে, সেও এখানে অংশ নিতে পারে। ’

অনূর্ধ্ব-১৬ বছর বয়সী কুরআনের হাফেজদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দিনভর রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এই অডিশন হয়েছে।

বাবা নজরুল ইসলামের সঙ্গে হাফেজ মো. জুবাইর হোসেন।  ছবি: ডিএইচ বাদলএবারের আয়োজন সম্পর্কে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান মানিক বলেন, এবার জাতীয় পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিভাগের উত্তর-দক্ষিণ দুটি জোনসহ পুরো দেশের মোট ১১ জোন থেকে অনূর্ধ্ব-১৬ বছর বয়সী ৩০ পারা কুরআনের হাফেজরা অংশ নিচ্ছে। প্রতিটি জোন থেকে মূল্যায়িত সেরা হাফেজরা ইয়েলো কার্ড প্রাপ্তির মাধ্যমে ইয়েস কার্ডের জন্য দ্বিতীয় রাউন্ডে অংশ নেবে। ইয়েস কার্ড পাওয়া হাফেজদের নিয়ে শুরু হবে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা। দেশবরণ্যে ইসলামিক স্কলার ও অভিজ্ঞ হাফেজদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী এই অডিশন ও পুরো আয়োজনের বিচারকার্য পরিচালনায় আছেন।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এবারের কুরআনের নূর প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ের প্রথম বিজয়ী হাফেজ পাবে ১০ লাখ টাকা ও সম্মাননা। দ্বিতীয় বিজয়ী পাবে সাত লাখ টাকা ও সম্মাননা। তৃতীয় পুরস্কার পাঁচ লাখ টাকা ও সম্মাননা। চতুর্থ ও পঞ্চম পুরস্কার দুই লাখ টাকা করে এবং সম্মাননা। এছাড়া ষষ্ঠ থেকে অষ্টম স্থান অর্জনকারী বাকি তিনজন পাবে এক লাখ টাকা করে আর্থিক পুরস্কার ও সম্মাননা। এবারও জাতীয় পর্যায়ের আট বিজয়ী, তাদের পরিবার ও ওস্তাদকে ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব পাঠানো হবে।

অন্যদিকে প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রথম বিজয়ী পাবে ১৫ লাখ টাকা ও সম্মাননা। দ্বিতীয় বিজয়ী পাবে ১০ লাখ টাকা ও সম্মাননা এবং তৃতীয় বিজয়ী পাবে পাঁচ লাখ টাকা ও সম্মাননা।

এই প্রতিযোগিতায় মিডিয়া পার্টনার দৈনিক কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ও ক্যাপিটাল এফএম। আর পবিত্র রমজানে কুরআনের নূর সম্প্রচারিত হবে নিউজটোয়েন্টিফোর টেলিভিশনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩
এমকে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।