ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

দাম্পত্যে সুখী হওয়ার উপায়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
দাম্পত্যে সুখী হওয়ার উপায়

সাহাবি হজরত জাবির বিন আবদুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো ব্যক্তির সফর (ভ্রমণ) থেকে ফিরে এসে রাতের বেলায় নিজ পরিবারের (স্ত্রী) সঙ্গে সাক্ষাৎ করাকে অপছন্দ করতেন।

দীর্ঘ সফর শেষে যখন আমি মদিনার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলাম তিনি আমাকে বললেন, অপেক্ষা করো যাতে মহিলারা প্রস্তুত হতে পারে। -সহিহ বোখারি : ৪৮৫৯-৪৮৬৪

আমরা জানি, কোনো পুরুষ যখন তার স্ত্রীর থেকে দূরে থাকেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই স্ত্রীকে কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তার মনে জাগে। সেই সঙ্গে স্ত্রীও চান নিজেকে সুন্দররূপে স্বামীর সামনে উপস্থাপন করতে। যেটা দিনের আলোয় খুব সহজ। আর বাস্তবিকভাবেই দিনে মহিলারা সুশৃঙ্খলভাবে থাকেন। কিন্তু সে যুগে সন্ধ্যা মানেই রাত ছিলো। এশার নামাজের পরই অনেক রাত গণ্য করা হতো। তাই স্বামী রাতে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে অপ্রস্তুত অবস্থায় দেখে কষ্ট পেতে পারে বা রাগান্বিত হতে পারে। এতে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক নয়। তাই আল্লাহর রাসূল (সা.) এমন নির্দেশ দিলেন। স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য সম্পর্ককে সুন্দরভাবে রক্ষা করলেন।

প্রাকৃতিক নিয়মের কারণে নারীদের কিছু সময়ের সীমাবদ্ধতা থাকে। তখন তার করণীয় কী হবে? এ সম্পর্কে হজরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত অনেক সুস্পষ্ট হাদিস আছে; তথাপি প্রতিটি মানুষের প্রকৃতি, পছন্দ-অপছন্দ, রুচি আলাদা আলাদা হয়। একজন স্ত্রীই জানেন তার স্বামী কিসে সন্তুষ্ট হন। তাই তিনিই ঠিক করেন কীভাবে তিনি তার স্বামীকে ভালোবাসবেন। এটা কোনো আলেম বা কোনো স্কলারের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তারা কেবল মৌলিক নীতিমালা বলতে পারেন। সাধারণ মানুষ সেই নীতিমালার আলোকে সেই সীমারেখা মেনে নিজ নিজ করণীয় ঠিক করে নেন।

বলা হয়- ‘নারী ঘরের শোভা। ’ দিনের শেষে প্রতিটি মানুষই ঘরে ফিরতে ব্যাকুল থাকে। কর্ম দিবসের শেষে জনবহুল ও যানজটপূর্ণ রাস্তার দিকে তাকালেই এর সত্যতা মেলে। কারণ ঘর-সংসারে সেখানে মায়া আছে, শান্তি আছে। শোভা আছে। তাই মানুষ ঘরে ফিরতে আকুল হয়ে থাকেন।

স্ত্রীকে বলা হয়, স্বামীর অর্ধাঙ্গিণী। অর্থাৎ স্ত্রী ছাড়া একজন স্বামী অসম্পূর্ণ। একইভাবে স্ত্রীও। মানুষের পূর্ণাঙ্গতা তখনই সম্ভব, যখন সে তার স্বীয় দায়-দায়িত্ব, কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে পারে। তার কাজগুলো পূর্ণরূপে সুন্দরভাবে সমাধা করতে পারে। আর এটা পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া কখনোই সম্ভব নয়। এই সহযোগিতার ক্ষেত্রে অবশ্যই জীবনসঙ্গী অগ্রাধিকার পাবেন। সেক্ষেত্রে জীবনসঙ্গীর পরিবারের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্যও পড়ে।

একজন ছেলেকে তার বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালনের জন্য যতটা কঠোরভাবে ধরা হবে একজন মেয়েকে ততটা হবে না। কারণ মেয়েরা বিয়ের পর আরেক বাড়িতে চলে যায়। দূর-দূরান্ত থেকে এসে বাবা-মার খেদমত করা কষ্টসাধ্য। এটা ইসলামের ভারসাম্যগত সৌন্দর্য।

তথাপি যে ছেলেটির জবাবদিহিতা কঠোর হবে; তাকে তো তার দায়িত্ব পালন করতেই হবে। এমতাবস্থায় একজন স্ত্রীই পারে স্বামীর অবর্তমানে তার দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে তাকে সহযোগিতা করতে। শশুর-শাশুড়ি আপন বাবা-মার স্থলাভিষিক্ত; নাকি নয়- এ বিতর্ক যুগ যুগ ধরে চলতে পারে। কিন্তু আপনি এক জীবনে মানুষ হিসেবে কতটুকু সফল, কতটুকু মানবতাবাদী, কতটুকু শিষ্ঠাচারী- তা এক জীবনেই নির্ধারণ হয়ে যাবে। আর এটাতে তো ঐকমত্য রয়েছেই যে, তারা আপনার আত্মীয়। বিশেষত প্রকৃতিগত বাস্তবতা যে একজন নারীর ভালোবাসা ও মমতাই পারে একটি বাসগৃহকে জান্নাতে রূপান্তরিত করতে পারে। সংসারে সুখ ডেকে আনতে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।