ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

নামাজের বাইরে দোয়া করার সময় হাত ওঠানো মুস্তাহাব

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২৪
নামাজের বাইরে দোয়া করার সময় হাত ওঠানো মুস্তাহাব

আল্লাহর কাছে হাত না তুলেও দোয়া করা যায়, নিজের প্রয়োজন তুলে ধরা যায় বা ক্ষমা প্রার্থনা করা যায়। তবে নামাজের বাইরে দোয়া করার সময় হাত ওঠানো মুস্তাহাব।

বেশ কিছু হাদিসে হাদিসে দোয়ার সময় হাত ওঠানোর কথা এসেছে। সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

إِنَّ رَبَّكُمْ حَيِيٌّ كَرِيمٌ يَسْتَحْيِي مِنْ عَبْدِهِ إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَيْهِ أَنْ يَرُدَّهُمَا صِفْرً

তোমাদের রব অত্যন্ত লজ্জাশীল ও দয়ালু। বান্দা যখন তার কাছে কিছু চেয়ে হাত ওঠায় তখন তার হাত খালি ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৫৬)

মালেক ইবনে য়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) বলেছেন,


إِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ فَاسْأَلُوهُ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ وَلاَ تَسْأَلُوهُ بِظُهُورِهَا

তোমরা আল্লাহর নিকট দোয়ার সময় হাতের তালু ওপরে সম্মুখে রেখে দোয়া করবে, হাতের পৃষ্ঠ ওপরে রেখে নয়। ( সুনানে আবু দাউদ ১৪৭৬)

দোয়া আল্লাহর প্রিয় আমল

দোয়া আল্লাহর প্রিয় আমল। নবি (সা.) বলেন, আল্লাহর কাছে দোয়ার মতো প্রিয় আর কিছু নেই। (মুসনাদে আহমদ) কারণ দোয়ায় বান্দার দাসত্ব, বিনয়, অহংকারহীনতা ও আল্লাহর কাছে তার মুখাপেক্ষিতা প্রকাশ পায়। আল্লাহ বলেন,

وَ قَالَ رَبُّکُمُ ادۡعُوۡنِیۡۤ اَسۡتَجِبۡ لَکُمۡ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَسۡتَکۡبِرُوۡنَ عَنۡ عِبَادَتِیۡ سَیَدۡخُلُوۡنَ جَهَنَّمَ دٰخِرِیۡنَ

তোমাদের রব বলেছেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবো। যারা অহংকার করে আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা শীঘ্রই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (সুরা গাফির: ৬০)
যে অহংকার করে আল্লাহর ইবাদত থেকে বিরত থাকে এবং দোয়া ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্চিত ও অপদস্থ করে জাহান্নামে ঢোকাবেন। নোমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, দোয়াই ইবাদত। (মুসনাদে আহমদ)

দোয়ার আদব

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, বান্দার সব দোয়াই কবুল হয় যদি না সে কোনো অন্যায় অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদের জন্য দোয়া করে এবং তাড়াহুড়া করে। এক সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, দোয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করার মানে কী? রাসুল (সা.) বললেন, সে বলতে থাকে, আমি তো দোয়া করেছি, আমি তো দোয়া করেছি, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হচ্ছে না! এভাবে হাহুতাশ করে সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং দোয়া করা ছেড়ে দেয়। (সহিহ মুসলিম)

ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, এ হাদিস থেকে বোঝা যায় দোয়ার আদব হলো চাইতে থাকা, নিরাশ না হওয়া। এতে আনুগত্য, আত্মসমর্পণ ও আল্লাহর কাছে বান্দার মুখাপেক্ষিতা প্রকাশ পায়। পূর্ববর্তী আলেমদের অনেকে বলেছেন, আমি দোয়া কবুল না হওয়ার চেয়ে দোয়া থেকে বঞ্চিত হওয়াকে বেশি ভয় করি। (ফাতহুল বারি)

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।