ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সম্প্রীতি রক্ষা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪
মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সম্প্রীতি রক্ষা

আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা কবিরা গুনাহ। কোরআন-হাদিসে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একজন মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক ও মেলবন্ধন টিকিয়ে রাখা।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যারা আল্লাহ্ যা সংযুক্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তা সংযুক্ত রাখে (আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে), নিজেদের প্রভুকে ভয় করে ও কঠিন হিসাবের আশঙ্কায় থাকে। ’ (সুরা আর-রাদ, আয়াত ২১)

আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যাপারে হাদিসে কঠিন হুঁশিয়ারি করে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ যাবতীয় সৃষ্টিকে সৃষ্টি করলেন।

যখন তিনি সৃষ্টি কাজ সমাধা করলেন, তখন আত্মীয়তার সম্পর্ক বলে উঠলো সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে আপনার কাছে আশ্রয়প্রার্থীদের এটাই যথাযোগ্য স্থান তিনি (আল্লাহ) বললেন, হ্যাঁ; তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তোমার সঙ্গে যে সুসম্পর্ক রাখবে, আমিও তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবো। আর যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবো। সে বলল হ্যাঁ; আমি সন্তুষ্ট হে আমার রব! আল্লাহ বললেন তোমার জন্য সেটাই হবে। রাসুল (সা.)  বলেন, ইচ্ছে করলে তোমরা (এ আয়াতটি) পড়ো, আয়াতের অর্থ  ‘তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তবে তোমাদের কাছ থেকে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা ছাড়া আর কী আশা করা যায় ওরা তো তারাই আল্লাহ্ যাদেরকে লানত করেছেন, বধির করে দিয়েছেন ও তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছেন। তারা কী কোরআন অনুধাবন করবে না বরং তাদের অন্তরগুলোর উপর তালা দেয়া। ’ (বুখারি, হাদিস নং  ৫৯৮৭; মুসলিম, হাদিস নং  ২৫৫৪)

মানুষ যদি আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কারণ কী—তা ভেবে দেখে, তাহলে দেখ যাবে ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার তুচ্ছ স্বার্থই প্রকৃত কারণ; কেয়ামতের দিন আল্লাহ্র কাছে যার কোনো মূল্য নেই। কিংবা এর কারণ হচ্ছে—তাদের মাঝে শয়তানের প্ররোচনা। শয়তান হীন সব কারণে তাদের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ তৈরি করে; যেসব কারণ ভ্রূক্ষেপ করার মত কিছু নয়।

এমন কি সম্পর্ক ছিন্ন করার যথাযথ কারণও যদি থাকে তবু শরিয়ত সম্পর্ক রক্ষা করে চলার নির্দেশ দেয়। ভুলগুলো এড়িয়ে ক্ষমা করে দেওয়া ও সহনশীল হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, ‘এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার কিছু আত্মীয় আছে আমি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলি; কিন্তু তারা আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। আমি তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করি; তারা আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। আমি তাদের সাথে সহিষ্ণু আচরণ করি; তারা আমার সঙ্গে মূর্খের মত আচরণ করে। তখন নবী (সা.) বললেন তুমি যেমনটি উল্লেখ করেছ যদি তুমি তেমন হও তাহলে তুমি যেন তাদের মুখে গরম ছাই ছুড়ে দিচ্ছ। তুমি যতক্ষণ এর উপর অটল থাকবে ততক্ষণ তাদের বিরুদ্ধে তোমার সাথে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী থাকবে। ’ (মুসলিম, হাদিস নং  ২৫৫৮)

নবী (সা.) বলেন, ‘সম্পর্ক রক্ষাকারী সে ব্যক্তি নয়—অন্যে সম্পর্ক রক্ষা করলে যে সম্পর্ক রক্ষা করে। বরং ওই ব্যক্তি হলো সম্পর্ক রক্ষাকারী যার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হলেও সে সম্পর্ক রক্ষা করে। ’ (বুখারি, হাদিস নং  ৫৯৯১) 

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।