ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

আল্লাহর নৈকট্য লাভের সম্মেলনে সামিল তারাও

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৫
আল্লাহর নৈকট্য লাভের সম্মেলনে সামিল তারাও ছবি :জি এম মু্জিবুর/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরের বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে চলছে লাখো মুসল্লির অবস্থান। আল্লাহর নৈকট্য লাভের পাশাপাশি পার্থিব জীবনে সুখ শান্তি লাভে দোয়া কামনায় ব্যস্থ সময় পাড় করছেন তারা।



ইজতেমায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত মুসুল্লিদের পাশাপাশি আছেন বিদেশিরাও। এরমধ্যে আল্লাহর নৈকট্য লাভে পিছিয়ে নেই শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী বধিররাও।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পেছেনে লাখো মাইল পেরিয়ে এসেছেন টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরের বিশ্ব ইজতেমায়। লাখো মুসুল্লির মতো তারাও দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, উন্নয়ন, সমৃদ্ধি কামনার মোনাজাতে অংশ নেবেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিবারের মতো এবারের ইজতেমায় দেশীয় মুসুল্লির পাশাপাশি বিদেশি মেহমানরাও এসেছেন। বিদেশিদের জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, চীন, জাপান, কুয়েত, কাতার, দুবাই, সৌদি আরব, ওমান, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, ইরাকসহ অন্যান্য দেশের মুসুল্লিরা জমায়েত হয়েছেন।

তাদের সঙ্গে ইজতেমায় প্রতিবন্ধীরাও। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় রয়েছেন বধিররা।

বিশ্ব ইজতেমা মাঠে দেখা যায়, ইজতেমা ময়দানের দক্ষিণ দিকে উত্তরা-আশুলিয়া বাইপাস সড়কের পশ্চিমে আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বধিরদের জন্য আলাদা বিশাল ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে।

ক্যাম্পে প্রবেশ পথের দিকে এগুলেই চোখে পড়বে-‘টঙ্গী বিশ্ব বধির’।   ক্যাম্পে তাদের গাইড করছেন অনেকে। বাংলা, আরবি, উর্দু, হিন্দি, মালয়সহ একাধিক ভাষায় ইজতেমায় বয়ান করছেন মুরুব্বিরা।

আর সেই বয়ান ইশারা ভাষায় বধিরদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন অন্যরা। এই ক্যাম্পে বাংলাদেশি শ্রবণ প্রতিবন্ধীরাও রয়েছেন।

এছাড়া একই পদ্ধতিতে তালিমও দেওয়া হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে।   ক্যাম্পের প্রবেশ পথে কথা হয়, আতিকুর রহমান নামে এক মুসুল্লি সঙ্গে।

কথা না বলতে পারলেও বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা পড়তে পারেন আতিকুর। তার হাতের লেখাও নজর কাড়ার মতো।

কাগজে লিখে বধির আতিকুর রহমান জানালেন, তার ছোটভাই সফিকুর রহমানও তার মতো। সফিকুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। বাবা শফিকুল্লাহ একজন ট্রাক চালক।

রাজবাড়ী সরকারি কলেজের চতুর্থ বর্ষের এই ছাত্র জানান, সাত বছর ধরে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন তিনি।
 
বধির মুসুল্লিদের জিম্মাদারের (নেতৃত্ব) দায়িত্বে রয়েছেন চট্টগ্রামের বাসিন্দা মাওলানা অ‍াবু হুরাইরা। তিনি বধির মুসুল্লিদের জামায়াত পরিচালনা থেকে শুরু করে সার্বিক দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।

বিশ্ব ইজতেমার বয়ান ইশারায় বুঝিয়ে দিচ্ছেন শহিদুল আলম। জানালেন, যখন বয়ান শুরু হয় তখন ইশারা ভাষায় তাদের (বধির) তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

মনযোগ দিয়ে আল্লাহ-র‍াসুলের কথা-বার্তা শোনেন তারা। বিশ্ব ইজতেমায় পুরোটা সময় ইবাদাত-বন্দেগীতে মশগুল থাকেন তারা।

এদিকে ইজতেমায় অংশ নেওয়া অন্যান্যদের মতো বধির মুসুল্লিদের জন্যও রয়েছে তথ্য কেন্দ্র।

তথ্য কেন্দ্রে দায়িত্বরত আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় যাতে বধির মুসুল্লিদের কোনো ধরনের সমস্যা ন‍া হয় সে জন্যিআমরা সচেষ্ট আছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৫

** বয়ানে মুখর ইজতেমা প্রাঙ্গণ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।